Main Menu

চাঁদাবাজির টাকায় ডাক্তাররা প্রমোদ ভ্রমণে! সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন ফাঁকা

+100%-

janata‘চাঁদা দাও, নইলে আগামী ছয় মাস হাসপাতাল নিষিদ্ধ’-কঙ্বাজার ভ্রমণের টাকা আদায় করতে স্থানীয় ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের উদ্দেশে এমন কথা বলেন সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে আবাসিক চিকিৎসক ডা. মোঃ নোমান মিয়া। চাঁদার পরিমাণ সর্বনিম্ন ৩০ হাজার আর সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা। ১০ টি কোম্পানীর প্রতিনিধির কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে এ চাঁদা। ৩০ হাজার করে দিয়েছে ৬ টি কোম্পানী। ৫০ ও ৪০ হাজার টাকা দিয়েছে ২ টি কোম্পানী। চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত মার্কেটিংও রয়েছে এ বাজেটে। তবে চাঁদা দাতা কারো ভ্রমণের সুযোগ নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী ও ঔষধ কোম্পানীর স্থানীয় প্রতিনিধি জানান, সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে ১৮ জন চিকিৎসক গত বুধবার গভীর রাতে রওয়ানা করেছেন কঙ্বাজার ভ্রমণে। বিলাসবহুল শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সাকুরা পরিবহণের একটি কোচে করে চিকিৎসকদল কঙ্বাজার গেছেন। সঙ্গী হয়েছেন পরিবারের ৪০ জন সদস্য। ঘুরবেন সেন্টমার্টিনও। হাসপাতাল এখন ফাঁকা। চাঁদা আদায়ের দায়িত্ব পালন করেন ডা. মো. নোমান মিয়া। প্রথম সারির ১২টি কোম্পানীকে টার্গেট করে ভ্রমণ বিনোদনের চাঁদা উত্তোলন করা হয়। চাঁদা আদায়ে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয় এমআর (মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ)দের। বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ‘এ’ ক্যাটাগরির প্রতিনিধিরা ৫০ হাজার , ‘বি’ ক্যাটাগরি ৪০ হাজার ও ‘সি’ ক্যাটাগরি বা নিচের সারিতে থাকা প্রতিনিধিরা ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। যারা টাকা দিবে না, তারা আগামী ছয় মাস হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবে না। আবার চাঁদা দাতা কেউ ভ্রমণে যাওয়ার দাবি তুলতে পারবে না। চাঁদাদাতাদের আগামী ৬ মাস দেয়া হবে বিশেষ সুবিধা। তাই চাকরি বাঁচানোর জন্য ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও দ্রুত জমা দেন চাঁদার টাকা। টাকার বদলে ৪০টি গেঞ্জী ও ৪০টি ক্যাপ দিতে হয়েছে এক কোম্পনীকে। সেখানে খেলার জন্য একটি ফুটবল আদায় করেছেন ছোট ১টি কোম্পানীর প্রতিনিধি থেকে।

‘বি’ ও ‘সি’ ক্যাটাগরির কোম্পানীর প্রতিনিধি চাঁদা দেয়ার ভয়ে এম আর এক সপ্তাহ হাসপাতালে প্রবেশ করেননি। তারপরও চাকরি বাঁচানোর জন্য ঋণ করে চাঁদা দিয়েছে কেউ কেউ। চাঁদার টাকা হাতে পেয়ে আবাসিক চিকিৎসক কোম্পানীর ব্যবস্থাপকদের ধন্যবাদ পত্রও দিয়েছেন। পত্রে ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। চাঁদা বুঝে পেয়ে লিখিত টোকেনও দিয়েছেন অনেককে। চাঁদা না দেয়ায় হাসপাতালের সাবেক এক চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে ডা. নোমান মিয়া এসকেএফ এর ঔষধ লিখতে নিষেধ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঔষধ কোম্পানীর স্থানীয় একাধিক প্রতিনিধি বলেন, সম্প্রতি হাসপাতালের একটি দেওয়াল নির্মাণে দুটি কোম্পানীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন চিকিৎসকরা। কঙ্বাজারে গিয়ে কাপড় চোপড়ও আমাদের টাকায় ক্রয় করা হবে। টাকা তো কম কামাননা। গেঞ্জী পরবেন, সেটাও দিতে হবে কোম্পানীকে। আবার কোম্পানীর নাম লিখা যাবে না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. হাসিনা আখতার বেগম ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মো. নোমান মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাসিনা আখতার বলেন, তাদের কঙ্বাজার যাওয়ার বিষয়টি আমি জানি। তবে এম আরদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। অফিস খোলার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখব। চাঁদা নেয়ার বিষয়টি অবশ্যই নীতিবহির্ভূত এবং গর্হিত।






Shares