আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা বাংলাদেশি ?
অবশেষে বাংলাদেশী শ্রমিক নিতে সৌদিদের অনীহা
বিল্লাল হোসনঃ সৌদিআরব সৌদি আরবে লাখ লাখ কর্মী নিয়োগের সরকারি ঘোষণা কি স্বপ্ন হয়ে থাকবে? এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। গত ২০শে এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে ভিসা দেয়ার কার্যক্রম চালু হলেও এ বিষয়ে সৌদিদের সাড়া কম। ‘সৌদি আরবের চাকরিদাতারা বাংলাদেশীদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।’ বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ দিতে যদিও সৌদি আরবের ৩৩৭টির বেশি নিয়োগদাতা অফিস ও কোম্পানি বাংলাদেশী কর্মীদের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেছে। জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নিয়োগ কমিটির সদস্য হাসান ওসমান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেয়ার প্রশ্নে সৌদি নিয়োগদাতা কোম্পানিগুলো সতর্ক।’
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগের ঘোষণা দিলে সারা দেশে বিরাট উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছিল। এখন সৌদি আরবের পত্রিকাই বলছে যে, বাংলাদেশ থেকে অল্পসংখ্যক লোক নেয়া হতে পারে। এর কারণ হিসেবে ‘বাংলাদেশীদের খারাপ আচরণকে সৌদি চাকরিদাতারা অন্যতম প্রধান কারণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেন্টারের পরিচালক তাসির আল মাফরেজ বলেন, মুসানেদ ওয়েবসাইট নিয়োগকর্তাদের জন্য একাধিক বিকল্প রেখেছে। সেখানে বাংলাদেশী কর্মীদের মূল্যায়ন করে নেয়ারও সুযোগ রাখা হয়েছে। যাতে তারা তাদের কর্মক্ষেত্রের গুণগতমানের উন্নয়ন ঘটাতে পারেন। জনাব আল মাফরেজ নিশ্চিত করেন যে, মন্ত্রণালয় একটি তদারকি ভূমিকা পালন করবে এবং আইনের কোন লঙ্ঘনকে তারা বরদাশত করবে না।
জেদ্দা ভিত্তিক ভাষ্যকার ইব্রাহিম নাফি বলেন, চাকারিদাতাদের প্রতিক্রিয়া থেকে বুঝতে পারছি যে, বাংলাদেশীরা একটি ভাল ইমেজ সৃষ্টি করতে পারেননি। আমি একজন নিয়োগদাতার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেন, যারা এ দেশে আসবেন তাদের যোগ্যতার দিকগুলো যাচাই করার সুযোগ না থাকায় তিনি চিন্তিত। সে কারণে তিনি আধা দক্ষ বাংলাদেশী কর্মী আনতে নারাজ।
এক সৌদি বাড়ির মালিক আবদুল্লাহ হাসওয়ানা বলেন, ২০০২ সাল থেকে আমি একজন বাংরাদেশীকে বাড়ির গার্ড হিসেবে চাকরি দিয়েছিলাম। বাসিন্দাদের কাছ থেকে লাগাতার অভিযোগ আসার কারণে তাকে আমি দেশে পাঠাতে বাধ্য হই। তিনি কাজে ফাঁকি দিতেন। মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। লোকটি আরও অনেক সমস্যা সৃষ্টি করেছিলেন।
আবদুর রহমান শুকির একজন সৌদি রেস্তরাঁ মালিক। তিনি রোববার বলেন, ‘আমি আমার রেস্তরাঁয় একজন বাংলাদেশী কর্মীও নিয়োগ দেব না। আমি আমার খদ্দেরদের সঙ্গে ঝামেলা পাকানো লোকজন পছন্দ করি না। ১০ বছর আগে আমি দুজন বাংলাদেশীকে নিয়োগ দিয়েছিলাম। তারা পৌরসভার পরিদর্শকের সঙ্গে ঝগড়া করেছিলেন।
নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা আহমেদ নাবিল বলেন, তিনি তার প্রতিষ্ঠান থেকে সকল বাংলাদেশী কর্মীদের বিদায় দিয়েছেন। কারণ, তারা কাজে ঢিলেঢালা ও অদক্ষ। ‘আমি অবশ্য লক্ষ্য করি যে তাদের মধ্যে কয়েকজন নির্মাণ সামগ্রী চুরির সঙ্গেও জড়িত।’
একটি বেসরকারি কোম্পানির মানব সম্পদ উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক আবদুল্লাহ হাবিব বলেন, একজন বাংলাদেশী গাড়িচালককে বরখাস্ত করা হয়েছে। কারণ তিনি গাড়িটি তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।