লন্ডনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির আয়োজনে চুয়াল্লিতম মহান বিজয় দিবস উদযাপন
১৯৭১ সালে ধর্মের নাম ব্যবহার করে যেভাবে বাংলাদেশে গণহত্যা করা হয়েছিল স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারকে কেন্দ্র করে আবারও একইভাবে স্বাধীনতাবিরোধী ধর্ম ব্যবসায়ীরা নতুন করে পবিত্র ধর্ম ইসলামের অপব্যাখ্যা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এইসব ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখ দাঁড়াতে হবে। নব প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে তুলে ধরতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি ইউকে আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন। বক্তারা বলেন, মানুষের জীবন মান উন্নত হচ্ছে, বাড়ছে মাথা পিছু আয়, দেশ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী নতুন করে দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এসব ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। গত রোববার ২০ ডিসেম্বর বিকেলে ইষ্টলন্ডনের ব্রডি আর্ট সেন্টারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি ইউকের প্রেসিডেন্ট বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এ্যাডভোকেট মেসবাহ উদ্দিন ইকুর সভাপতিত্বে ও সংগঠনের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ডা: পলিন নার্গিসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসবে উপস্থিত ছিলেন কবি শামীম আজাদ, বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গবেষক ড. মুকিদ চৌধুরী, লেখক ডলি ইসলাম ও মুক্তিযোদ্ধা ফয়েজুর রহমান খান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে আগতদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট এ্যাডভোকেট মেসবাহ উদ্দিন ইকু, মহান বিজয় দিবসের বিভিন্ন দিক ও মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর অবদান নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের সেক্রেটারি ড. সৈয়দ হামিদুল হক, ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এহসানুল হক, ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম ভুইয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাদি, সংগঠনের ট্রেজারার এআর এম সেলিম, জয়েন্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার দুল্লা রহিম, অর্গেনাইজিং সেক্রেটারি সাদিকুল আলম রাসেদ, জয়েন্ট অর্গেনাইজং সেক্রেটারি সাবেক ছাত্র নেতা ফারুক আহমেদ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইমরান চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা কায়ছর সৈয়দ, মুক্তিযোদ্ধা লোকমান আহমদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ৭ মার্চ জাতির জনকের ভাষণের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মুক্ত ছিল সেখানে পকিস্তানী বাহিনী প্রবেশ করতে পারেনি। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের উপর একটি চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা ও বিভিন্ন রণাঙ্গনের ৫০টি চিত্র স্থান পায়। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতি ইউকে নির্মিত ‘নাইন মানথস টু ফ্রিডম’ নামে মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। দুুর্লভ এই ডকুমেন্টারিতে রয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয়ের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে মানুষের দুর্দশা, বাংলাদেশের গণহত্যা, আন্তর্জাতিক ত্রাণ তৎপরতা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বনেতৃবৃন্দের ভুমিকা বিশেষ করে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, ফান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট, আমেরিকান একজন সিনেটর ও কয়েকজন ব্রিটিশ এমপির বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর চিত্র।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এতে বৃটেনের স্বনামখ্যাত সংগঠন ক্যালচারাল লিংক পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশেষ করে সংগঠনের শিশু শিল্পিদের অজয়ন্তা, রুপম, মায়া ও প্রিতমের গান সকলকে মুগ্ধ করে। সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্যালচারাল লিংকের চারজন শিশু শিল্পীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট এ্যাডভোকেট মেসবাহ উদ্দিন ইকু।প্রেস রিলিজ