Main Menu

বিএপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স

+100%-

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে উত্তেজনাপূর্ণ বিএপিএলের ৫ম আসরে শিরোপা জয় করলো রংপুর রাইডার্স।

মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাশরাফি বিন মুর্তজার রংপুর রাইডার্স মাত্র এক উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ২০৬ রান। এর মধ্যে গেইল একাই করেন ৬৯ বলে ১৪৬ রান। এর জবাবে সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভার শেষে সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় ১৪৯ রান করে। ফলে ৫৭ রানে বিশাল জয় পায় রংপুর।

ফাইনাল ম্যাচে দানবীয় ব্যাটিং দেখান ক্রিস গেইল। ফাইনালের মত ম্যাচেও যখন গেইলের ব্যাট এতটা বিধ্বংসী হয়ে ওঠে, তখন প্রতিপক্ষ দলের কিছু করার থাকে না। কিছু করতে পারেনি ঢাকা ডায়নামাইটসও। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দল নিয়েও একা এক গেইলের ব্যাটিং তাণ্ডবের কাছে হেরে যেতে হলো সাকিব আল হাসানের দল ঢাকা ডায়নামাইটসকে। সে সঙ্গে রংপুর রাইডার্সের প্রথম এবং চতুর্থবারেরমত বিপিএলের শিরোপা উঠে গেলো মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে।

গেইল তাণ্ডবে রংপুর রাইডার্সের রান উঠল ২০৬ রান। জয়ের জন্য ২০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ১৪৯ রানেই থমকে যেতে হলো গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসকে। ফাইনালের মত ম্যাচে ৫৭ রানের বিশাল ব্যবধানে মাশরাফির কাছে হারতে হলো সাকিব আল হাসানকে। ফলে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয় করা হলো না সাকিবের। অন্যদিকে গত আসর বাদ দিয়ে বিপিএলটা হয়ে থাকল একা মাশরাফিরই। ঢাকাকে দু’বার, কুমিল্লাকে একবার এবং সর্বশেষ এবার রংপুরকে শিরোপা উপহার দিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।
এতে তো শীতকাল। তারওপর রাতের ম্যাচে পরে টস জিতে ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই যখন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জনসন চার্লসের উইকেট তুলে নিলেন সাকিব আল হাসান, তখন ঢাকার গ্যালারিতে যে ঢেউ উঠেছিল তখন কী কেউ ভাবতে পেরেছিল ম্যাচের পরবর্তী অংশে কী ঘটতে যাচ্ছে? চার্লস জনসন আউট হয়ে যাওয়ার পর শুরুতে গেইল একটু রয়ে-সয়ে খেলতে শুরু করেন। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম তো ছিলেন যেন বোতলবন্দি।

চার্লস আউট হওয়ার ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে হাত খুলতে থাকেন গেইল। গোড়ালির ইনজুরির কারণে তিনি সম্ভবত পণ করেই নেমেছিলেন আজ দৌড়ে রান কম নেবেন। বল যা পাবেন, পাঠিয়ে দেবেন বাউন্ডারির বাইরে। হয়তো সে কারণেই, তার ব্যাট থেকে আসলো রেকর্ড ছক্কার মার, ১৮টি। ছক্কা থেকেই আসলো তার ১০৮ রান। ২০ রান বাউন্ডারি থেকে (৫টি বাউন্ডারি)। অথ্যাৎ ৬৯ বলে খেলা ১৪৬ রানের মধ্যে ১২৮ রানই এলো তার চার এবং ছক্কা থেকে। শেষ তিন ওভারেই গেইল-ম্যাককালাম মিলে নিলেন ৬৪ রান। শেষ ১০ ওভারে নিলেন ১৪৩ রান।

ব্রেন্ডন ম্যাককালামও শেষ দিকে এসে জ্বলে উঠলেন এবং করলেন টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। ৪৩ বলে খেললেন ৫১ রানের ইনিংস। ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে তিনিও মেরেছেন ৩টি ছক্কার মার। দু’জন মিলে গড়লেন ২০১ রানের বিশাল জুটি। বিপিএলে এটাই সেরা জুটির রেকর্ড। আগেরদিনই ১৫১ রানের জুটি গড়েছিলেন ম্যাককালাম-চার্লস জনসন জুটি। একদিনও টিকলো না রেকর্ডটি। সেটি ভেঙে একাকার করে দিলেন গেইল ম্যাককালাম।

গেইল তাণ্ডবে ২০৬ রানের বিশাল স্কোরের নিচে চাপা পড়ার পর ঢাকার পরাজয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। এতবড় রানের চাপে পড়ে মানসিকভাবে হেরে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তার ওপর ম্যাচটা যদি হয় ফাইনাল, তাহলে তো কথাই নেই।

তেমনই অবস্থা হলো ঢাকা ডায়নামাইটসের। ২০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটস। সে সঙ্গে প্রথমবারেরমত বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে মাশরাফি বিন মর্তুজার রংপুর রাইডার্স।

২০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মাশরাফি বিন মর্তুজার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেলেন ঢাকার ওপেনার মেহেদী মারূফ। মারকুটে ব্যাটসম্যান জো ড্যানলি মাঠে নেমে ঝড় তোলার অপেক্ষায় ছিলেন; কিন্তু তার সেই অপেক্ষা আর কাজে লাগেনি। সোহাগ গাজীর ঘূর্ণিতে স্কুপ করতে গিয়ে নাহিদুল ইসলামের হাতে ধরা পড়েন তিনি। রানের খাতা তখন শূন্য।

এভিন লুইসের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল ছিল ঢাকা। তিনিও ১টি ছক্কা এবং ২ বাউন্ডারির সাহায্যে ১৫ রান করার পরই সোহাগ গাজীর বলে আকাশে ক্যাচ তুলে দিয়ে মাশরাফির হাতে ধরা পড়েন। অসাধারণ একটি ক্যাচ ধরেন মাশরাফি। বল খেলেন তিনি ৯টি। কাইরণ পোলার্ড বেশ কয়েকটি ম্যাচে বিধ্বংসী ব্যাটিং করে জিতিয়েছেন ঢাকাকে। তিনি এলেন উইকেটে। দেখলেন রংপুরের বোলারদের। কিন্তু জয় করতে পারলেন না। ৫ বলে ৫ রান করার পর রুবেলের বাউন্সি বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং লেগে ক্রিস গেইলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।

জুটি বাধার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান এবং জহুরুল ইসলাম। দু’জনের ৪২ রানের জুটির ওপর প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছিল ঢাকা। কিন্তু নাজমুল ইসলাম অপুর বলে সুইপ করতে যান সাকিব আল হাসান। কিন্তু ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি। বল সোজা গিয়ে ভেঙে দেয় তার লেগ স্ট্যাম্প। সঙ্গে সঙ্গে ‘ভাইপার’ ড্যান্সে মেতে ওঠেন নাজমুল অপু। ১৬ বলে ২৬ রান করে আউট হয়ে যান ঢাকার অধিনায়ক। ৩টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মার ছিল তার ইনিংসে।

রবি বোপারার বলে মাত্র ১ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরে যান ঢাকার আরেক নির্ভরতা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। শহিদ আফ্রিদিকে আজ মাঠে নামানো হয় শেষ দিকে যেন ঝড় তুলতে পারেন সে জন্য। তিনিও আজ যোগ দিলেন ব্যর্থতার মিছিলে। মাঠে নামার পর একটি ছক্কা মেরেছিলেন ঠিক। কিন্তু ৫ বলে ৮ রান করে আউট হন নাজমুল অপুর বলে। রুবেলে হোসেন ক্যাচটি ধরার সঙ্গে সঙ্গে আবারও ‘ভাইপার’ ড্যান্সে মেতে ওঠেন নাজমুল অপু।

অষ্টম উইকেট জুটিতে সুনিল নারিন আর জহুরুল ইসলাম অমি মিলে ৪২ রানের জুটি গড়েন। ওপেনিংয়ে নেমে নারিন যেভাবে তাণ্ডব তুলতে পারেন, নয় নম্বরে নেমে সেভাবে তুলতে পারলেন না। ১৫ বলে ১৪ রান করে অবশেষে শ্রীলঙ্কান ইসুরু উদানার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে গেলেন সাজঘরে।






Shares