ক্রিকেটের কুলাঙ্গার সমাজ : প্রথম পত্র(পাকিস্তান)
ক্রিকেট টা ভদ্রলোকেদের খেলা নামে পরিচিত, ক্রিকেট নামটাই স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ধারক! ক্রিকেট খেলা বেশ প্রাচিন হলেও এর গায়ে কলঙ্ক টা ইতিহাসের পরিচিত খেলাধুলার মধ্যে সবচেয়ে পরেই লাগে! স্পট ফিক্সিং, ম্যাচ ফিক্সিং, আইসিএল এ খেলার জন্য নিজের দেশ কে ছেড়ে আসা ইত্যাদি কারনে ক্রিকেট সমাজ বিব্রত হয়েছে অনেক সময়। সেই কিছু ঘটনাই তুলে ধরার চেষ্টা করবো এই সিরিজে…
ক্রিকেটে প্রথমবার কলঙ্কদের দাগ ভালভাবে পরে ১৯৯৯ সালে! অধিনায়ক হিসেবে দক্ষিন আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়েছিলেন সেলিম মালিক। সেখানে তার বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে ম্যাচ হারার অভিযোগ আসে। ২০০০ সালে পাকিস্তান আদালত তাকে নিষিদ্ধ করে আজিবনের জন্য। তখনকার প্রযুক্তি এতটা উন্নত ছিলনা, সেইসাথে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা ক্রিকেটের দুর্নীতি দমন কমিশন এর কার্যক্রম এতটা ততপর ছিলনা বিধায় এই ব্যাপারে সত্যতা কতটুকু ছিল বা কি ঘটেছিল সেই ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যায় না। ২০০৮ সালে পাকিস্তানের আদালত তার উপর আজিবন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়!
২০০০ সালেই আবার অভিযোগ আসে এক পাকিস্তানির বিরুদ্ধে। এবার অভিযোগ টা আসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার আতা উর রেহমান এর বিরুদ্ধে, এর আগে ১৯৯৮ সালে তিনি দাবি করেছিলেন ওয়াসিম আকরাম তাকে টাকা দিয়েছিলেন বাজে বোলিং করার জন্য। পরবর্তিতে তদন্তে বেরিইয়ে আসে থলের বিড়াল। তিনি তার কুকর্মের জন্য নিষিদ্ধ হন ২০০০ সালে।
বেশকিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে বুকিদের সাথে চুক্তি করার! আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বেশ নাম খারাপ হলেও ২০০৬ সালে তার উপর নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়। কেন নেয়া হয় সে কারন ও অজানা!
এই ঘটনাটি ছিল ক্রিকেট বিশ্বকে স্তব্ধ করিয়ে দেয়ার মত! ২০১০ সালে অধিনায়ক সালমান বাটের প্ররোচনায় স্পট ফিক্সিং এর ফাদে পা বাড়ান গতির জাদুকর মোহাম্মদ আসিফ এবং তরুন তুর্কি মোহাম্মদ আমির! কিন্তু বোকামি টা তাদের বেশ বেশিই হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে সাধারন মানুষ-ই তাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে! নো-বল টা এতই বড় ছিল যে আইনের ফাক গলে আর বের হতে পারেননি তা। সালমান বাট নিষিদ্ধ হন ১০ বছরের জন্য, মোহাম্মদ আসিফ ৭ বছরের জন্য। বাকিজন ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাঠে ফিরেছেন চলতি বছরে।
এই তিনজন ক্রিকেটার ছিলেন ততকালিন বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার! তারা যে কোন দলের জন্য হতে পারতেন ভয়ঙ্কর! এর পেছনে তাই অনেকেই ভারতের একটি কাল হাত দেখতে পান।
২০১০ সালেই কাউন্টি ক্রিকেটে অনিয়মের অভিযোগ আনা হয় লেগ-স্পিনার দানিশ কানেরিয়ার বিরুদ্ধে। ২০১৩ সালে তাকে সেই অভিযোগে আজিবন নিষিদ্ধ করার হয়।
২০১১ সালে সাসেক্সের হ্ইয়ে খেলার সময় নিজের দেশের নাম আবারো খারাপ করেন নাভেদ আরিফ। এবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল দুর্নীতি দমন নিয়মের বাইরে গিয়ে কাজ করার অভিযোগ।
পাকিস্তানিদের রক্তেই সমস্যা- বলে একটা প্রবাদ আছে। ব্যাপারটা অনেকটা এরকমই! ক্রিকেটের বুকে বেশিরভাগ সময়েই তাদের জন্য কলঙ্কের কালি লেপন হয়েছে। এখনো অবস্থা এমনই যে ঘড়োয়া ক্রিকেটে পাকিস্তানিরা যেখানে আছেন সেখানে খেলা কতটুকু শুদ্ধ আছে তা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ থেকে যায়। এরকম কলঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পাশাপাশি সরকার এরো এগিয়ে আসা উচিত।