সরাইলে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক উদ্ধোধন: বিরোধ ভুলে দুই এমপি এক মঞ্চে
সরাইল প্রতিনিধি॥ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক উদ্ধোধন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে সকাল থেকেই ছিল কড়া পুলিশ প্রহরা। ছিল র্যাব, অতিরিক্ত পুলিশ ও আর্মড পুলিশের টহল। দীর্ঘদিন পর দুই এমপি বসেছিলেন পাশাপাশি। শুরু থেকে দুজনের মধ্যে কোন কথা না হলেও আল-মামুন সরকারের বক্তব্যের ফলে কেটে যায় সেই বন্ধাত্ব। একে অপরের সাথে মুচকি হেঁসে আলাপ চারিতায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বক্তব্যেও একে অপরের গুন কির্তনে কৃপনতা করেননি। এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে দুজন দুজনকে দিয়েছেন সহযোগীতার আশ্বাাস। গতকাল সোমবার সকালে জেলা পরিষদের অর্থায়নে উপজেলা সদরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে স্মৃতিফলক উদ্ধোধন করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নির্বাহী সদস্য,পার্বত্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ক্ষ্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের এম এড.জিয়াউল হক মৃধা এমপি,জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ একেএম এমদাদুল বারী,ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার,সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফরহাদ রহমান মাক্কী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড.আবদুর রহমান, সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ হালিম, সাধারন সম্পাদক রফিক ঠাকুর, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল জব্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ আলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইসমত আলী,ডেপুটি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন।
এ স্মৃতিফলকে সরাইলের ১৫ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সহ ২৮৩ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর সরাইল মুক্ত দিবস উপলক্ষে কমান্ডার মো: ইসমত আলীর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মানপত্র পাঠের পর স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আবদুর রাশেদ। প্রধান অতিথি ছিলেন র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। প্রধান অতিথি বলেন, ৪৩ বছর পরে হলেও শুরু করতে পেরেছি তাই আজকের দিনটি ইতিহাসে অনন্য। মুক্ত দিবসে তিনি বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা, সরাইলের কৃতি সন্তান দেওয়ান মাহবুব আলী, এ্যাডভোকেট আবদুস সামাদ, সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম, শহীদ এ কে এম ইকবাল আজাদ সহ ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও আড়াই লক্ষ সম্ভ্রম হারা মা বোনকে শ্রদ্ধার সাথে স্বরন করেন। তিনি বলেন, মুজিব ও স্বাধীনতা দুটি এক জিনিষ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার ইতিহাস পাক-বাহিনীর নির্মম অত্যাচার নির্যাতনের ইতিহাসকে কবর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। দেশ পরিচালনায় জননেত্রী শেখ হাসিনার ভূয়শি প্রশংসা করে বলেন, দেশের সর্ব ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। জানুয়ারীর আগেই সকল শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক গ্রামে ক্লিনিক স্থাপন করে ৩৩ প্রকারের ফ্রি ঔষধ বিনা মূল্যে দিয়ে গরীব অসহায় মানুষদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছে। ডিজিটালের ছোঁয়ায় এখন মোবাইল টিপে সেকেন্ডের মধ্যে সব কিছু পাওয়া যাচ্ছে। এ গুলো হাসিনার অর্জন। ষড়যন্ত্র চলছে সকল অর্জনকে নস্যাত করার। স্বাধীনতার স্বপক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কাজ করতে হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষে।
প্রসঙ্গত: ২০১২ সালের ১৫ ডিসেম্বর চুন্টায় সাতটি সড়কের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্টানকে কেন্দ্র করে সদরের এমপির সাথে সম্পর্কের অবনতির সূত্রপাত হয় মৃধার। এর কিছুদিন পর মৃধার নির্বাচনী এলাকা আশুগঞ্জে তাকে দাওয়াত না দিয়ে একাধিক প্রকল্পের উদ্ধোধন করেন মোকতাদির চৌধুরী। এতে চরম ক্ষুদ্ধ হন মৃধা। পরে তিনি এর প্রতিবাদে এ বছরের প্রথম দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোড মোড়ে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনটি প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়ে মাঠে নামে সরাইল আলীগের একাংশ। বেঁধে যায় সংঘর্ষ। এতে আহত হয় কয়েকজন। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনার কাছে বিচার চেয়ে বক্তব্যও দিয়েছিলেন সরাইলের এমপি।