সরাইলে ইউএনও’র অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ॥ সড়ক অবরোধ
প্রতিনিধি : বাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ‘বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্ট ২০১৪ এর ফাইনাল খেলার নিমন্ত্রণপত্রে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের নাম না থাকার প্রতিবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের সমর্থকরা।
সোমবার দুপুরে উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে বিক্ষোভকারীরা সরাইল- অরুয়াইল সড়ক অবরোধ করে।
জানা গেছে, সোমবার বিকেলে স্থানীয় অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্ট ২০১৪ এর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
খেলা উপলক্ষে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিলিকৃত নিমন্ত্রনপত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমানের নাম দেয়া হয়। (প্রধান অতিথি অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা জাতীয় পার্টির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশেষ অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি) নিমন্ত্রণপত্রে ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শের আলম মিয়ার নাম দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষুদ্ধ হন শের আলম।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকগন উপজেলা সদরে ও উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলকারীরা ইউএনওর অপসারণ দাবি করে ইউএনওর বিরুদ্ধে নানা অশালীন শ্লোগান দেয়। মিছিল শেষে দুপুর সাড়ে বারটার দিকে সরাইল অরুয়াইল সড়কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় অবস্থান নিয়ে টায়ারে আগুন জালিয়ে সড়ক অবরোধ করা হয়। অবরোধ চলাকালে এক সভায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শের আলম মিয়া বলেন, যে অনুষ্ঠান হচ্ছে সেখানে আওয়ামীলীগের কোন প্রতিনিধি নেই। আছে জাপার সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা ও বিএনপির নেতা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান। তারা (অতিথিরা) যাদের নামে অনুষ্ঠান তাদের সম্পর্কে কিছুই বলবেন না। এটা উদ্যেশ্য প্রনোদিত ভাবে করা হয়েছে। তাই ইউএনওর অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলন চলবে। আগামীকাল ( মঙ্গলবার) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে বেলা ১১ টার দিকে ইউএনওর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের হরা হবে।
এদিকে ইউএনও’র অপসারন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ নিয়ে ভিন্নমত পোষন করেছেন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ বেলায়েত হোসেন মিল্লাত বলেন, উপজেলা প্রশাসন কাউকে দাওয়াত না দিলে সেটা আমাদের দলীয় প্রধান বা নেতারা দেখবেন। এই আন্দোলনের সাথে ছাত্রলীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মাহফুজ আলী বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায়। এ ধরনের কর্মসূচী আত্মঘাতী। এই কর্মসূচীতে যুবলীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, আমার সময়ও নিমন্ত্রণপত্রে ভাইস চেয়ারম্যানের নাম থাকতো না। কারন আমি ছিলাম আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি। ভাইস চেয়ারম্যানের নাম দাওয়াতপত্রে দেওয়া যেত। তবে এনিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলকে আওয়ামীলীগ সমর্থন করে না। এ আন্দোলনের সাথে আওয়ামীলীগের কোন সমর্থন নেই।
এদিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএওর বিরুদ্ধে অশালীন শ্লোগানের প্রতিবাদে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে তাদের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে কর্মবিরতি পালন করতে থাকেন। আধা ঘন্টা পর ইউএনওর হস্তক্ষেপে তার স্ব স্ব কার্যালয়ে ফিরে যান।
এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, বিগত পাঁচ বছরের অফিস নথিপত্র অনুসরন করে নিমন্ত্রণপত্র তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া ব্যানারে ভাইস চেয়ারম্যানের নাম দেওয়া হয়েছে এবং মাইকে প্রচারেও তাঁর নাম বলা হয়েছে। এখানে কাউকে হেয় করা হয়নি।