ঢাকায় ইতালির নাগরিককে হত্যার দায় স্বীকার আইএসের!
রাজধানী ঢাকার গুলশানে সোমবার ইতালীয় নাগরিককে হত্যা করার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর ইন্টারনেটভিত্তিক তৎপরতা নজরদারি করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এমন ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’ সোমবার এ তথ্য জানায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম মঙ্গলবার সকালে বলেন, আইএসের কথিত দাবি সত্য নাকি বিভ্রান্তিকর, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে পুলিশ এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়।
ডিএমপির কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সোমবার বলেন, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, এ ব্যাপারে পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয়। পুলিশ মনে করছে, এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
সোমবার সন্ধ্যার দিকে গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার (৫০) নিহত হন। গুলশানে অনেক লোকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আইএসের দাবির বিষয়টি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের নামে এক অনলাইন বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করা হয়েছে।
তাবেলা সিজার নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আইসিসিও-বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রুফস প্রকল্পের ব্যবস্থাপক বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। আইসিসিও সারা বিশ্বে খাদ্যনিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচন নিয়ে কাজ করে।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় গুলশান ২ নম্বরের ৯০ নম্বর সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন সিজার। এ সময় তিন যুবক মোটরসাইকেলে তাঁকে অনুসরণ করে। একপর্যায়ে দুজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি ছোড়ে। তিনটি গুলিই তাঁর শরীরে বিদ্ধ হয়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। লোকজন তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান গতকাল বলেন, সম্ভাব্য আলামত সংরক্ষণ করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। নিহত ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু খোয়া যায় নি বলে মনে হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা পূর্বপরিকল্পনা থেকে ঘটে থাকতে পারে।
পুলিশ জানায়, তাবেলা সিজার আইসিসিও-বিডির যে কার্যালয়ে চাকরি করতেন, সেটি গুলশান-২-এর ৩০ নম্বর সড়কে অবস্থিত। ৫৪ / ৫১ নম্বর সড়কের একটি ফ্ল্যাটে তিনি একাই থাকতেন।
এর আগে ২০১২ সালের ৫ মার্চ মধ্যরাতে গুলশানের ১১৭ নম্বর সড়কে নিজের বাসার কাছে গুলিবিদ্ধ হন সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুলশান থানার উপপরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর এ মামলায় পাঁচ আসামিকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন আদালত। আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।