কসবা পৌর মেয়রের উদ্যোগে কুরআনের আদলে প্রথম ভাস্কর্য ::দেখতে শত শত মানুষের ভিড়
খ.ম.হারুনুর রশীদ ঢালী ঃ বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম কুরআন ভাস্কর্য তৈরি হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায়। ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটের মেধাবী ছাত্র ভাস্কর কামররুল হাসান শিপন এ ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন। তবে ইতোমধ্যেই ভাস্কর্যটি নির্মাণ শেষের দিকে হলেও এটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার লোকজন। এর আগে বাংলাদেশে আর কেউ এ রকম ভাস্কর্য নির্মাণ করেনি বলে জানা যায়।
কসবা পৌরসভার মেয়র মো: এমরান উদ্দিন জুয়েলের তত্ত্বাবধানে নির্মিত কুরআনের আদলে তৈরি এ ভাস্কর্যটি আগামী ৩১ ডিসেম্বর রোববার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা পৌর এলাকার ব্যস্ততম কদমতলা মোড়ে ভাস্কর্যটি তৈরি করা হয়েছে। উন্নতমানের গ্লাস ফাইভার দ্বারা তৈরি নান্দনিক ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১৬ ফিট এবং প্রস্থ ৮ ফিট। এটি তৈরিতে প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
আড়াইবাড়ি হযরত আজগর আহম্মদ আল কাদেরী (র:) ছাহেবের পাক দরবার শরীফের দ: পাশে কদমতুলী মোড়ের নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম কুরআনের ভাস্কর্যটি দেখতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় করে স্থানীয় ও দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আগত লোকজন। পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌর মেয়র মো: এমরান উদ্দিন জুয়েলের সার্বিক দিক নির্দেশনায় ও ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের এডিবির প্রকল্পের পৌরসভার অর্থায়নে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রকল্পের প্রারম্ভিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার ৫’শ ১৬ টাকা। ১ জুন এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান কমিউনিকেশন এর পক্ষে কসবা পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: রতন সরকার। কাজ শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ সালের মধ্যে। এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রায় ৭৫ ভাগ কাজ শেষ করা হয়েছে।
মেয়র এমরান উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় এর ভাস্কর্যটি নির্মান করেন ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটের মেধাবী ছাত্র ভাস্কর কামররুল হাসান শিপন। এছাড়াও কুরআনিক ভাস্কর্যটি তৈরি উদ্যোগে নিয়েছেন কসবা পৌরসভার মেয়র মো:এমরান উদ্দিন জুয়েল। ব্যতিক্রমধর্মী এই ভাস্কর্য নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা সব মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। দেশের আলেম সমাজও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। পাশা পাশি এই ভাস্কর্যটি যেন কোনভাবেই অবহেলিত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। এলাকাবাসীরা জানান, অপরাধমুক্ত সমাজ গঠন এবং সুন্দর পরিবেশ নির্মাণে কসবার মুসলমানের কাছে এই ভাস্কর্য হয়ে থাকবে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। এই ভাস্কর্যটি মানুষের মনে ইসলাম বোধ সৃষ্টি করবে। এছাড়াও পৌর এলাকায় এই ভাস্কর্য তৈরি করার চিন্তা করার জন্য সকলেই মেয়র মো: এমরান উদ্দিন জুয়েলকে ধন্যবাদ জানান। তবে এই ভাস্কর্যটির যেন কোনভাবেই অবহেলিত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখার জন্য অনুরোধ জানান এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে কসবা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান জানান, পৌর এলাকায় ভাস্কর্যটির কাজ প্রায় শেষের দিকে। এটি সম্পূর্ণভাবে এডিবির অর্থায়নে করা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৩১ তারিখের মধ্যে এর সব কাজ শেষ হবে। এটি তৈরি করতে গিয়ে যেন কোন ত্রুটি না থাকে সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা সকলেই কাজ করে যাচ্ছি। কসবা পৌরসভার মেয়র মো. এমরান উদ্দিন জুয়েল জানান,আমরা মুসলমান হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা পৌরসভার সর্বসম্মতিক্রমে এই ভাস্কর্যটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন শেষ মুহুর্তের কার চলছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ভাস্কর্যটি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও কসবা পৌর এলাকার টিআলঅী বাড়ি মোড়ে, সুপার মাকের্ট মোড়সহ বিভিন্ন যায়গায় আরো কিছু ভাস্কর্য ও ফোয়ারা নির্মাণ করা হচ্ছে।