ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ সোহাগের ঘরে ঈদ মানেই চোখের জল
মোঃশামীম সরকারঃ প্রতিবছরই আনন্দের বারতা নিয়ে আসে ঈদ। কিন্তু ঈদের এই কাঙ্ক্ষিত আনন্দের ছোঁয়া বছর ধরে উপভোগ করতে পারছে না পরিবারের সদস্যরা।এইবছর পরিবারের সদস্যদের ঈদ কাটবে নিদারুণ উদ্বেগ ও অসহনীয় যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে। এবারো মুসলিম জাহানের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আজহা চলে এলেও নিঁখোজে হওয়া মোঃসোহাগ সরকার পরিবারের সদস্যদের মাঝে নেই কোনো আনন্দ, নেই কোনো উৎসব। আছে শুধুই চোখের জল।
লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরের ইতালির উপকূলে ট্রলারডুবির ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় উপজেলার রুটি গ্রামের যুবক ২৫ বছর বয়সী সোহাগ নিখোঁজ হন ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট | এরপর থেকেই তার সন্ধানে তার বাবা নান্নু মিয়া ঘুরছেন সরকার, বিভিন্ন মহল ও বিভিন্ন মিডিয়াতে। কিন্তু দ্বারে-দ্বারে ঘুরলেও পুএকে ফিরে পাবার আশ্বাসও জুটছে না তার। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার পথে ট্রলারডুবির এক মাস পরও খোঁজ মেলেনি বাংলাদেশী যুবক সোহাগের। জীবিত মানুষটির আশা ছেড়ে মরদেহ দাফন করার সান্তনাটুকু থেকেও বঞ্চিত তার পরিবারে এখন শুধুই আহাজারি।
ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ সোহাগের মা-বাবা ভাই বোনদের এবারের ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আজহা উদযাপন কেমন হবে তা জানতে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য বলেন, যাদের পুএ থাকে না কেবল তারাই এর যন্ত্রণা বুঝতে পারেন, অন্য কেউ নয়।এই বিষয়ে তার বড় বোন তাসমিনা বেগম বলেন, ‘বিগত ঈদগুলোর মত এবারও নিয়ম রক্ষার ঈদ উদযাপন করবো।এর বাইরে অন্য কিছু নয়।’ সারা দিন কিছুই করবার পারি নাই। খালি মনে হয় আমার ভাইডার কথা। এই ভাই দুনিয়াতে আসার পর আমাদের পরিবারের ভাগ্যটা বইদলে যায়। আল্লাহ আমার লক্ষ্মীডারে লইয়া গেছেগা-’ বলেই কেঁদে ওঠেন তিনি।
ছোট ভাই মোঃনাজির সরকার (১৮) বলে, ‘আমাদের কোনো ঈদ নাই। সব দিনই এখন সমান। গত রমজান ঈদে ভাই আমাকে উপহার হিসেবে samsung galaxy s6 ও নতুন জামা-কাপড় কিনার জন্য ৫০০ টাকা দিয়েছিল।গত ঈদে পরিবারের সবাই সাথে ফোনে কথা বলেছিল! তখন ঈদ ঈদ লাগছে। এইবার তো আমার ভাইও নাই ঈদও নাই। একদিন পরপর আমাকে ফোন দিয়ে বলতো মানুষের সাথে ভালভাবে চলার জন্য। কিন্তু আমার ভাইয়ের উপদেশগুলো আর শুনতে পারবনা
’-ভারী হয়ে আসে মোঃনাজির সরকারের কণ্ঠ। কাঁদতে থাকে ফুঁপিয়ে।