বিজয়নগরে প্রশাসনের তৎপরতায় বালু উত্তোলন বন্ধ
মো,জিয়াদুল হক বাবু : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে অবৈধ ভাবে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন প্রশাসনের তৎপরতায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের ১৯০নং মৌজার নিদারাবাদ গ্রামে লোহর নদী সংলগ্নে এ বালু উত্তোলন চলছিল বলে অভিযোগ উঠছিল।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্খানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় গত শুক্রবার( ৫ নভেম্বর) বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রাবেয়া আসফার সায়মা সরেজমিনে উপস্থিত থেকে তা বন্ধ করে দেন।
বালু উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন বিজয়নগর এর অফিসিয়াল ফেসবুক একাউন্টে আজ (৬ নভেম্বর) শনিবার রাত প্রায় ৮টার দিকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লিখেন-
বিগত রবিবার (৩১ অক্টোবর) একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে ফোনের ঐপারের লোকটি নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, পার্শ্ববর্তী কৃষি জমির ক্ষতি করে কিছু দুর্বৃত্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করে গত কয়েকদিন ধরে বালু উত্তোলন করছে। এলাকাবাসী বারবার কাকুতি মিনতি করে অনুরোধ করলেও বালু উত্তোলনকারীরা তোয়াক্কা না করে বালু উত্তোলন করে। উক্ত কার্যক্রম বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর অধীনে অপরাধ তাই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে খোঁজ নিয়ে সত্যতা যাচাই করতে বললে তিনি জানান ঘটনাটি সঠিক। পরে সেই তহসিলদারের তৎপরতায় বালু উত্তোলনের কাজ ১ দিন বন্ধ থাকে।
ঠিক ১ দিন পর অর্থাৎ মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) পুনরায় একই নম্বর থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয় সেই কতিপয় দুর্বৃত্ত ড্রেজার মেশিন অপসারণ না করে পুনরায় সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত বালু উত্তোলন করছে। এবার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিজয়নগর থানাকে বিষয়টি দেখতে বলি এবং বালু উত্তোলন বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলি। ওসি সাহেবের চেষ্টায় পরের ২ দিন উত্তোলন বন্ধ থাকে।
কিন্তু অতিরিক্ত লোভী আর আইন অমান্যকারীরা সবসময়ই সুযোগ খুঁজে তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য। সেই দুর্বৃত্তকারী গোষ্ঠী এবার রাতের আঁধারে (রাত ১২ টার পর থেকে) বালু উত্তোলন করা শুরু করে। এবার সেই নম্বর থেকে রাত ১ টা ৩০ মিনিটে ফোন করে এবং এসএমএস করে জানানো হয় তারা এখনও বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। পরদিন শুক্রবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ উক্ত স্থানে উপস্থিত হই।
মূল রাস্তা থেকে প্রায় ২০০ মিটার ভিতরে লোহর নদীর পাশে এই বালু উত্তোলন কাজ চালানো হচ্ছিল। পাশের কিছু ধানী জমি ইতোমধ্যে বালু উত্তোলনের ক্ষতির প্রভাবে ভাঙনের সম্মুখীন হয়েছে। বড় বড় জায়গায় গর্ত করে ফেলেছে উত্তোলনকারীরা। ফলাফল স্বরূপ পাশের জমিগুলো ধ্বসে যাচ্ছে এবং ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
ড্রেজারগুলোর মালিক বা চালনাকারীদের ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট অপরাধের প্রমাণ পাওয়ায় ড্রেজারগুলো এলাকাবাসীর সহায়তায় অচল করে দেয়া হয়।
বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট তহশিলদারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি আরো উল্লেখ করে বলেন- বিজয়নগর উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পদক্ষেপে আরো ৬ জায়গায় বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে।
আপনাদের চোখে এমন অপরাধের চিত্র ধরা পড়লে আমাদের জানান। জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় আপনার দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হন।এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ,এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিজয়নগরে ৬ টি বালুর স্পট বন্ধ করা হয়েছে এবং সব ধরনের অপরাধ বন্ধে প্রশাসন কাজ করছে।