আশুগঞ্জে মাদ্রসা ছাত্রীকে পুড়িয়ে মারা মামলার আসামীরা ১৪ দিনেও গেফতার হয়নি, শঙ্কিত বাদীর পরিবার
সংবাদদাতা : আশুগঞ্জ উপজেলার চর চারতলা গ্রামের রিক্সা চালক মস্ত মিয়ার ১৬ বছরের কিশোরী কন্যা মাদ্রাসা ছাত্রী রেখা বেগমের শরীরে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারা মামলার আসামীদের কেউই দীর্ঘ ১৪ দিনেও গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে শঙ্কায় ভূগছেন ভিকটিমের পরিবার।
মামলার বিবরনে প্রকাশ, উপজেলার চর চারতলা গ্রামের রিক্সা চালক মস্তু মিয়ার মাদ্রায় পড়–য়া ১৬ বছরে কিশোরী কন্যা রেখা বেগমকে এলাকার প্রভাবশালী পরিবারে বাকী মিয়ার বখাটে ও লম্পট পুত্র মেহেদী হাছান মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার সময় উত্যক্ত করতো। এক পর্যায়ে তাঁকে ধর্ষন করে মোবাইল ভিডিওতে আপত্তিকর ছবিও তোলে সে। এ ঘটনার পর রেখা অন্তসত্ত্বা হলে রেখাকে বাধ্য করে তাঁর ৪ মাসের সন্তানকে অবৈধভাবে গর্ভপাতও ঘটায় ঐ লম্পট। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি কার্য্যালয়ে দেনদরবারও হয়েছিল। এর পর মেহেদী প্রায়ই তাঁর পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে লজ্জায় অসহায় রেখার মাদ্রাসায় পড়া বন্ধ হয়ে যায়। গত ২৮ নভেম্বর তারিখে মেহেদী রেখার নিকট খবর পাঠায় যে গ্রামের নির্জন একটি স্থানে আসলে আপত্তিকর ভিডিও’র মেমোরি কার্ডটি ফেরত দিয়ে দেয়া হবে। এসময় রেখা সুমন নামের অপর এক কিশোর ছেলেকে সাথে নিয়ে ঐ স্থানে গেলে, সেখানে পৌছার পর মেহেদী রেখাকে বেদম মারধর শুরু করে। এসময় সুমন দৌড়ে এসে রেখার মা-বাবাকে জানালে তাঁর ঘটনাস্থলে যেতেই মেহেদী, মনিরসহ কয়েক জন মিলে তাদের উপরও হামলা করে। এর পর থানা পুলিশের কাছে বিষয়টি বলা হলে, ঐ দিনই পুলিশ লম্পট মেহেদীকে আটক করে পরে তাঁকে ছেড়ে দেয়।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন মেহেদীকে আটক এবং ছেড়ে দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তাঁকে অন্য এক মামলায় আটক করা হয়েছিল। মামলার বিবরণীতে আরো বলা হয়েছে, মেহেদী পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে রাতে এর প্রতিশোধ হিসেবে রেখাকে প্রান নাশের হুমকী দেয় এবং ০১ ডিসেম্বর মেহেদীর নেতৃত্বে ছায়েদুল, মনির, জালাল, কামাল ও সাদ্দাম রেখার বাড়ীতে প্রবেশ করে তাঁকে একা পেয়ে তাঁর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পলিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা রেখাকে উদ্ধার করে প্রথমে আশুগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ১০ দিন হাসপাতালে কাতরিয়ে ১১ ডিসেম্বর মৃত্যুর কাছে হার মানে। এ ব্যাপারে ভিকটিম রেখার মা রাবিয়া বাদী হয়ে আশুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করলেও, আসামীরা কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় তদন্ত কাজ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাদী। তবে পুলিশের দাবী গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।