তালশহর স্কুলে আবু সামার কমিটি ভেঙে দিলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়
ডেস্ক ২৪:: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর এ এ আই উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘লাঠিয়াল বাহিনী প্রধান’ খ্যাত আবু সামা’র নেতৃত্বে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে জরুরি ভিত্তিতে এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা দলের মাধ্যমে তদন্ত করানো হয়। তদন্ত ও নিরীক্ষায় স্কুলের বর্তমান কমিটি এবং সভাপতির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ সঠিক বলে প্রমাণিত হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শাখা-৫ থেকে রোববার (৩১ জানুয়ারি) এক আদেশে আরও বলা হয়, সভাপতির বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণসহ বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে জরুরি ভিত্তিতে এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হলো।
সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক তালশহর এ এ আই উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বাতিল করা হলো। তবে বিদ্যালয় পরিচালনায় বৃহত্তর স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে একটি এডহক কমিটি গঠনের পরামর্শ দেওয়া হলো।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) থেকে জানা যায়, তালশহর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সামা অবৈধভাবে নিজের দুই ছেলেকে আজীবন দাতা সদস্য বানানো ছাড়াও অবৈধভাবে নিজের ছেলেকে জলাশয় ইজারা দেয়া, পুকুর নিলামের টাকা আত্মসাৎ, অর্থ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অভিযোগ উঠে আসু সামা’র বিরুদ্ধে।
তার বিরুদ্ধে লাঠিয়াল বাহিনীর মাধ্যমে স্কুলের কমিটির পদ দখলসহ নানা অভিযোগের তদন্ত করতে নেমে এসব প্রমাণ পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ডিআইএ’র দুই কর্মকর্তা গত ২১ অক্টোবর সরেজমিনে তালশহর এ এ আই উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর আবু সামা’র বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে সম্প্রতি প্রতিবেদন জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আবু সামা আশুগঞ্জ এলাকায় এক আতঙ্কের নাম। তাদের পিতা-পুত্রের অত্যাচারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীরাও এলাকা ছাড়া হয়েছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ১৯৮২ সালে জাতীয় পার্টির হয়ে তালশহর ইউপি চেয়ারম্যান নিবাচিত হয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন আবু সামা। পরবর্তীতে গম চুরির দায়ে বেশ কয়েকরার জেলে ছিলেন। মামলা থেকে রেহাই পেতে ১৯৯৪ সালে জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগদান করে ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগে আসেন। ২০১৩ সালে তালশহর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ দখল করে নেন।
২০১৬ সালে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করার জন্যে পার্থী শূন্য করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
গত কয়েক বছরে তার অত্যাচারে তালশহর ও পাশ্ববর্তী এলাকায় খুন, হত্যা, জমি দখল, সংখ্যা লঘু নির্যাতন, অগ্নি সংযোগ, চাঁদা, দাঙ্গাবাজির কারণে অনেক পরিবার এলাকা ছাড়া হয়েছেন। আবু সামা সরকার দলীয় পরিচয়ে প্রশাসনকে প্রভাবিত করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।সূত্র:: বাংলানিউজ২৪