আশুগঞ্জে মাদক কারবারির হাতে যুবক খুন, ঘাতক আটক
আশুগঞ্জে বাড়িতে ডেকে নিয়ে হৃদয় (২৫) নামে এক যুবককে খুন করেছে রুবেল (৪০) নামে এক মাদক কারবারি। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হৃদয় যাত্রাপুর গ্রামের ইমানদির বাড়ির মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে। ঘাতক রুবেল একই গ্রামের রানিপুকুর পাড়ের মৃত আব্দুর রহীমের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার ৩ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ বাড়ির পাশে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় ঘাতক মাদক কারবারি রুবেলকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। রুবেলের বিরুদ্ধে থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
হৃদয়কে তার নিজবাড়ি থেকে ডেকে রুবেল তার বাড়িতে নিয়ে যায়। তার বাড়ির উঠোনে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে হৃদয়কে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে উঠোনে ফেলে রুবেল পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন হৃদয়কে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তীতে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ভৈরব এলাকায় মারা যায়।
খবর পেয়ে প্রথমে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘাতক রুবেল বাড়ির পাশেই আত্মগোপন করে আছে জেনে পুলিশ পুরো এলাকাটি ঘিরে ফেলে। পুলিশ পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এব্যাপারে নিহতের পিতা মো. জসিম উদ্দিন জানান, সকালে আমার ছেলে হৃদয়কে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় রুবেল। কিছুক্ষণ পরে আমার মেয়ের জামাইয়ের ফোনে জানতে পারি আমার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় উপজেলা হাসপাতালে। পরে ঢাকা নেয়ার পথে হৃদয় মারা যায়। তিনি বলেন, আমার ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
তবে ঘাতক রুবেলের মা লালু বেগম জানান, বাড়ির উঠোনেই হৃদয়ের সাথে রুবেলের হাতাহাতির এক পর্যায়ে রুবেল হৃদয়কে ছুরিকাঘাত করে । তিনি বলেন আমার এই ছেলে মাদকাসক্ত, তার অত্যাচারে আমার পরিবারটি ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বার বার পুলিশকে বলেও এর কোন প্রতিকার পায়নি। তার জন্য আমার স্বামী স্ট্রোক করে মারা গেছে। আমি নিজে স্ট্রোক করে চিকিৎসাধীন আছি। সে যেন জেল থেকে বেরিয়ে আসতে না পারে। নিজের ছেলের কঠিন শাস্তি দাবি করেন মা লালু বেগম।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নাহিদ আহম্মেদ জানান, হত্যার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো বলা যাচ্ছে না। ঘটনার মূলহোতা রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যা মামলা রুজু করার পর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।