আশুগঞ্জে নদীকে বাঁচাতে “সেভ দ্য রিভার” বিষয়ক সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত॥
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ সরকারি হিসেব মতে দেশে প্রায় ৪০০ নদী থাকলেও এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক নদীতে শুকনো মৌসুমে কোন জল থাকে না। সময়মতো ড্রেজিং না করা, অপরিণামদর্শী লোকজন কর্তৃক অবৈধভাবে মাটি ফেলে ভরাট করে দখল উৎস মুখে বাঁধ ও অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট তৈরি ইত্যাদি কারণে পানি প্রবাহ কমে গিয়ে এবং চর পড়ে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অসংখ্য নদ-নদী হারিয়ে যাচ্ছে। নানা ধরনের শিল্প বর্জ্যরে দূষণে নদীর প্রাণ বৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তর হাওরাঞ্চলের গেটওয়ে হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জসহ নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট ইত্যাদি হাওর প্রধান জেলার অসংখ্য নদ-নদী শুকনো মৌসুমে শুকিয়ে যায়। বড়-বড় নদ-নদীগুলোতে প্রতিদিনই ভাসছে অসংখ্য ডুবোচর। তাই শুকনো মৌসুমে এ অঞ্চলের পরিবহন ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে নিয়োজিত লঞ্চ, কার্গো ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারসহ পাঁচ সহ্রাধিক নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে। একই কারণে ব্যাহত হচ্ছে বোরো জমিতে সেচের কাজ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা আর অবহেলার কারণে এরই মধ্যে এ অঞ্চলের প্রধান নদ-নদীসহ অসংখ্য শাখা নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
তাই নদীকে বাচাঁতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনা নদীতে “সেভ দ্য রিভার” বিষয়ক সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করেছে সামাজিক সংগঠন সেভ দ্য ভিলেজ নামে একটি সংগঠন। রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেঘনা নদীর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ফেরীঘাট থেকে শুরু করে কিশোরগঞ্জের লন্দিয়ারচরের টুকচানপুর পাড়া পর্যন্ত নদীর দু-পাড়ের বাসিন্দাদের সাথে সচেতনা মূলক নানা পরার্মশ দিয়েছে সংগঠনের শতাধিক সদস্য। এর আগে সকালে আশুগঞ্জ গোল চত্বর থেকে একটি র্যালী বের হয়ে মেঘনা নদীর ফেরীঘাট এলাকাতে গিয়ে শেষ হয়। সামাজিক এ কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তা ও আলোচক ছিলেন অর্থ মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব ও সেভ দ্য ভিলেজ সংগঠনের চেয়ারম্যান মো: জেহাদ উদ্দিন। এ ছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্য ভিলেজ সংগঠনের সেক্রেটারি মো: শাহ আলী সরকার, জেলা প্রতিনিধি এটিএন বাংলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ইসহাক সুমন, সেভ দ্য ভিলেজ স্টুডেন্ট ইউনিটের সভাপতি কামরুল ইসলাম, সেভ দ্য ভিলেজ স্টুডেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারি আশেকুর রহমান সরকার, সংগঠনের সদস্য মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ ফুল মিয়া, সুমন, মাসুমসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা। আগামীদিনে এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব ও সেভ দ্য ভিলেজ সংগঠনের চেয়ারম্যান মো: জেহাদ উদ্দিন। তিনি বলেন “সেভ দ্য ভিলেজ” সংগঠনটি শুধু নদীকে নিয়ে কাজ করছে না। সামাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে এগিয়ে নিতেও কাজ করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বেড়তলা গ্রামের কৃতি সন্তান অর্থ মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব ও নজরুল গবেষক মোঃ জেহাদ উদ্দিন “সেভ দ্য ভিলেজ” সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন।