নাসিরনগরে রাতের আঁধারে সুপার ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আহত ৭
মৃধা মোরাদ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে রাতের আঁধারে দাখিল পরীক্ষার একটি কেন্দ্রের হল সুপার ও পরীক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে অন্য পরীক্ষার্থী ও তাদের স্বজনদের বিরুদ্ধে। শিক্ষককে রক্ষা করতে আসা পরীক্ষার্থীরাও মারধর থেকে রেহাই পায়নি। শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার দাঁতমন্ডল এরফানিয়া আলিম সিনিয়র মাসাদ্রসা কেন্দ্রের পাশের একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় আহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
আহতরা হলো শাহরিয়ার কামাল (১৬),আয়েত আলী (১৭),মফিজুল ইসলাম (১৫),রাজু মিয়া (১৭),মিনারা বেগম (১৫),লাখী আক্তার (১৬),হেপী আক্তার (১৬)। এরা সবাই খান্দুরা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার পরীক্ষার্থী এবং আহত হল সুপার জহিরুল ইসলাম খান্দুরা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারেনটেনডেন্ট।
পুলিশ ও আহত হল সুপার জহিরুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের আসন বিন্যাস করার কথা। কিন্তু সে নিয়ম না মেনে অনৈতিক সুবিদা গ্রহণ করে দাঁতমন্ডল মাদ্রাসার কেন্দ্র সচিব মোহাম্দ ইলিয়াস মিয়া দাখিল পরীক্ষার্থী তানভিরের সুবিধামতো আসন বিন্যাসে বাংলা ১ম পত্র, ২য় পত্র ও ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষা নেন। পরে ইংরেজি ২য় পত্রের পরীক্ষার আগের রাতে আসন পূন:বিন্যাসের অনিয়মটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দুজন প্রতিনিধির দৃষ্টিতে আসলে শনিবার নিয়ম অনুযায়ী পুনরায় আসন বিন্যাস করা হয়।
এই বিষয়টি জানতে পেরে দাঁতমন্ডল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী শেখ তানভির মিয়াসহ ৬/৭ জন শনিবার রাত ৮টার সময় দাঁতমন্ডল গ্রামের দরজ মিয়ার বাড়িতে খান্দুরা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীসহ হল সুপার জহিরুল ইসলামের কক্ষে প্রবেশ করে আসন পরিবর্তনের বিষয়টি জানতে চায়।
তখন জহিরুল জানায়,পূর্বের আসন বিন্যাসে অনিয়ম হয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নতুন করে আসন বিন্যাস করা হয়েছে। এ কথা বলার সাথে সাথেই তানভিরসহ কয়েকজন যুবক তাঁর ওপর হামলা করে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন। তাঁর চিৎকারে পাশের রুমে থাকা শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে শিক্ষার্থীদের উপরও হামলা চালায়। এর কিছুক্ষণ পর তানভিরের বাবা মো. সোররহমানসহ ও বেশ কয়েকজন স্থানীয় যুবক এসে হল সুপারকে হত্যার হুমকী প্রদান করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা দেয়া হয়।
সংবাদ পেয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ সাজেদুর রহমান,উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম ভুইয়া হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসা শেষে আহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দাতঁমন্ডল গ্রামে ফিরে যেতে চায়নি। রাতে উপজেলা সদরে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক শরীফুজ্জামান চৌধুরী সুমনের বাসায় রাত্রিযাপন করেন।
তবে দাঁতমন্ডল মাদ্রাসার কেন্দ্র সচিব মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসন বিন্যাসের কথা অস্বীকার করে বলেন নিয়ম অনুযায়ী সব কিছু হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা মো. আজহারুল ইসলাম ভূইয়া জানান, আসন বিন্যাসে অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীল উপর হামলার বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে এবং অভিযুক্ত দাখিল পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন।