নাসিরনগরে পুলিশ হেফাজতে আসামীর মৃত্যু



নাসিরনগর প্রতিনিধিঃ নাসিরনগরে পুলিশ হফেজতে বাবুল মিয়া নামে(৫৫) এক আসামীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার ২৫ আগষ্ট বেলা আড়াই গ্রেপ্তার হন বাবুল মিয়া। প্রায় চার ঘন্টা পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত বাবুল নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের কৈয়ারপুর গ্রামের মৃত লাল খাঁর ছেলে।
ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের কোয়রপুর গ্রামের। নিহতের ভাতিজা ছত্তর অভিযোগ করে বলেন, আমার চাচাকে আটক করার সময় বারবার জিজ্ঞেস করেছি তার নামে থানায় কোন মামলা আছে কিনা,তখন তারা কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখাতে পারেনি। তাকে ছাড়া জন্য পুলিশ ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ চেয়েছিল। তবে পুলিশের ভাষ্য, তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে আটকের পর সন্ধ্যায় বুকে ব্যথা অনুভব করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এদিকে স্বামীর মৃত্যুর পর নিহতের স্ত্রী আছিয়া বেগম বার বার সংজ্ঞা হারান।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোবাবর ১১টার দিকে উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের কোয়রপুর গ্রামের বাজারের একটি কাঠের দোকান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেল সাড়েছয়টার দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সাতটার সময় সে মারা যায়।
পুলিশ জানায়, বাবুলের নামে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। পুলিশ ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পূর্বভাগ ইউনিয়নের কোয়রপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নেওয়ার পর বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করে বাবুল। বিয়টি জানতে পেরে পুলিশ তাকে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। মৃত্যুর পরে তার বুকের এক্স-রেও কারানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আএমও) শাহরিয়ার সোহেব জানান হৃদরোগের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যেতেন পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহতের ছত্তর, সাহাব উদ্দিন, স্থানীয় দুলাল মিয়া, মাতব্বর ফুল মিয়া বলেন, এসআই শামীমসহ পোশাক বিহীন দুজন পুলিশ কোয়রপুর গ্রামের একটি কাঠের দোকান থেকে বাবুল মিয়াকে আটক করে একটি চায়ের দোকানে নিয়ে যায়। পরে সেখানে থেকে তাকে গ্রামের একটি সেতুর উপরে নেয়া হয়। তার কোনো অভিযোগ আছে কি না জানতে চাই স্থানীয় লোকজন । সে সময় এসআই শামীম বলে কোনো অভিযোগ নেই। নতুন মামলা দিমু। ৫০ হাজার টাকা লইয়া আয়, ছাইড়া দিমু। পরে স্থানীয় কয়েকজন ২০ হাজার টাকা নিয়ে গেলেও এসআই শামীমকে ৫ হাজার টাকা দেন। এরই মধ্যে বাবুল অসুস্থ হয়ে মারা যান।
নাসিরনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম আহমেদ বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। সেই কাগজও আমাদের কাছে আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসামীকে ছাড়ার কোনো সুযোগ নেই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। তার মৃত্যুর বিষয়টি ও পুলিশ তাঁকে ছাড়ার জন্য পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচের নাসিরনগরে পুলিশ হফেজতে বাবুল মিয়া নামে(৫৫) এক আসামীর মৃত্যু হয়েছে। বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত করে বলতে পারব।