মেঘনার সরাইল মোহনায় লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা
প্রতিনিধি : সরাইলে দিন-দুপুরে যাত্রীবাহী নৌকায় ডাকাতদের ছুরিকাঘাতের ভয়ে দুই সন্তান নিয়ে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়া গৃহবধূ শরিফা বেগমের সন্ধ্যান গতকাল রোববারও মেলেনি। পরিবারের আশঙ্কা, শরিফা বেঁচে নেই। তারা রাত-দিন নদীতে জাল ফেলে খুঁজছে লাশ।
গতকাল রোববার সকালে সরেজমিন পানিশ্বর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লাশের অপেক্ষায় মেঘনা নদীর পাড়ে অবস্থান করছে নিখোঁজ শরিফা বেগমের সন্তান ও তার স্বজনেরা। এদিকে মেঘনায় নৌ-ডাকাতি ও গৃহবধূ নিখোঁজের ঘটনায় ২৪ ঘন্টা পর গতকাল সকালে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) কাজী দিদারুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন। এ ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত শনিবার সকালে এই ঘটনার খবর ওসিকে জানালে তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। পানিশ্বর গ্রামের মোঃ রাশেদ মিয়া, আজিজ মেম্বার, শামীম মিয়া সহ অনেকে জানান, মুঠোফোনে ওসি গিয়াস উদ্দিন স্থানীয়দের জবাব দেন-�আমরা আমাদের কাজ করছি। আপনারা আপনাদের কাজ চালিয়ে যান।
নিখোঁজ গৃহবধূর পিতা শাখাইতি গ্রামের মো. আবু তাহের বলেন, বেশক�জন নৌকার মাঝি নদীর মোহনায় একজন মহিলার লাশ ভেসে থাকতে দেখেছে। এমন খবরে নৌকা নিয়ে নদীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ফিরছি।কোথাও লাশের সন্ধান পাইনি। থানা পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। শরিফার সন্তান রুজিনা, কাউছার, মনির, তোফাজ্জল ও নয়নমনি মায়ের খুঁজে নদীর পাড়ে কাঁদছে। গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুল আলীম, মোঃ শাহজাহান মিয়া, আল-আমিন সহ অনেকে জানান, মেঘনায় ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ যথাসময়ে আসেননা। শনিবারের ঘটনা মুঠোফোনে থানার ওসিকে জানালেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সরাইল থানার ওসি (তদন্ত) কাজী দিদারুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, আপনারা ওসি সাহেবের সাথে যোগাযোগ করুন।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গিয়াস উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে ওসি (তদন্ত) গিয়েছিলেন। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধূর সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। গৃহবধূর পরিবার মামলা না দিলে পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা করবে।
উল্লে�খ্য, গত শনিবার সকালে দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে মেঘনা নদীর অরুয়াইল ঘাট থেকে আশুগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে উপজেলার পানিশ্বরের কালাসূতা নামক এলাকায় কাকলী ইটভাটার সামনে ১৪/১৫ যাত্রীবেশী ডাকাত অস্ত্রের মুখে নৌকার যাত্রীদের মারধোর করে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এসময় ডাকাতরা ১৫ যাত্রীকে ছুরিকাঘাত করে। ডাকাতদের কবল থেকে রক্ষা পেতে শরীফা বেগম তার ২ সন্তান কাউছার মিয়া-(১৪) ও নয়নমনি-(৮)কে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়।