সরাইলে দিন-দু পুরে মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহি নৌকায় ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতরা নৌকার যাত্রীদের মারধোর ও ছুরিকাঘাত করে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়।ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার সকালে সরাইলের পানিশ্বর এলাকায়। ডাকাতদের ভয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পড়া এক মহিলা নিখোঁজ হয়। এলাকাবাসী জানান, গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলার ধামাউড়া গ্রামের কালা মিয়ার মাঝির নৌকাটি দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে মেঘনা নদীর অরুয়াইল ঘাট থেকে আশুগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। নৌকাটি পরে আজবপুর ঘাটে যাত্রা বিরতি করলে সেখান থেকে ১৪/১৫ যাত্রীবেশী ডাকাত নৌকায় উঠে। নৌকাটি সকাল সোয়া ১১টায় পানিশ্বর ঘাটে যাত্রা বিরতি করলে সেখান থেকে আরো ১০/১২জন যাত্রী নৌকায় উঠে। নৌকাটি পানিশ্বর ঘাট থেকে আশুগঞ্জের উদ্দেশ্যে পুনরায় যাত্রা শুরু করলে কালাসূতা নামক এলাকায় কাকলী ইটভাটার সামনে পৌছলে যাত্রী বেশী ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের মারধোর করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ডাকাতদের বাঁধা দিলে ডাকাতরা নৌকার মাঝি রুক্কু মিয়াসহ ৫জনকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় ডাকাতরা নৌকার যাত্রী পানিশ্বর ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামের এনার বাড়ির মোঃ আবু তাহেরের কন্যা শরীফা বেগম-(৩৫)কে ছুরির ভয় দেখালে শরীফা তার ২ সন্তান কাউছার মিয়া-(১৪) ও নয়নমনি-(৮)কে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। পরে ডাকাতরা নৌকাটি নিয়ে আশুগঞ্জের সোনারামপুর এলাকায় পৌছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইঞ্জিনের নৌকা এসে তাদেরকে নিয়ে পালিয়ে যায়।আহত নৌকার মাঝি রুক্কু মিয়া-(৫০), যাত্রী হান্নান মিয়া-(৩০), জলিল মিয়া-(৩০) সহ ছুরিকাহত ৫ যাত্রী ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। এদিকে জীবন বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া কাউছার- ও নয়নমনি সাতার কেটে নদীর তীরে উঠতে পারলেও বিকেল ৬টা পর্যন্ত তাদের মাতা শরীফা বেগমকে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ হওয়া শরীফা বেগমের পুত্র কাউছার মিয়া বলেন, আম্মার সাথে আমরাও নদীতে ঝাঁপ দেই। পরে আমরা ভাই-বোন সাতার কেটে তীরে উঠতে পারলেও আম্মাকে পাওয়া যায়নি। বিকেল ৬টার দিকে পানিশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল মোমিন বলেন, নিখোঁজ শরীফার খোঁজে নদীতে জাল ফেলে তাকে খোঁজা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পানিশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম নূরু বলেন, আমি ডাকাতির ঘটনা শুনেছি। নিখোজ শরীফার খোঁজে মেঘনায় জাল ফেলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ আমার কাছে লিখিত অভিযোগও করেনি। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিব।
|