প্রশাসনের নিরবতায় সরাইলে গড়ে উঠছে অবৈধ ইটভাটা
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল থেকে: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা প্রশাসনের কাছে ৩২টির ইটভাটার তালিকা । বাকি ৫টি অজানা। এর মধ্যে ২৯টিই অবৈধ। বেশ কয়েকটি ইটভাটায় মাটি নিচ্ছে সওজ ও খাস জায়গা থেকে। সকল বিভাগ গুলোকে দিতে হয়েছে মোটা অংকের মাসোয়ারা। আর এ জন্যই বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই নিশ্চিন্তে দাফটে ইট পুড়ছেন মালিকরা।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কালিকচ্ছ, শাহবাজপুর, শাহজাদাপুর ও চুন্টা ইউনিয়নেই গড়ে উঠেছে ইটভাটা। তবে অধিকাংশ ভাটাই গড়ে উঠেছে ফসলি জমির মাঝখানে ও বাড়িঘরের পাশে। ক্ষতি হচ্ছে ফসলি জমির। কষ্টে সময় পার করছেন বসতবাড়ির লোকজন। অথচ তাদের নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, উৎপাদন অনুমতি ও ট্রেড লাইসেন্স। শ্রম আইনও মানছেন না তারা। বেশীর ভাগ ভাটার চিমনিতে রয়েছে ক্রুটি। যে ৮টির কাগজপত্র রয়েছে সেগুলোর অনুমতিও প্রশ্নবিদ্ধ। বেশ কয়েকটি ভাটা সওজ ও খাস জায়গা থেকে অনেকটা দাফট দেখিয়ে মাটি কাটছেন দেদারছে। সেই মাটি নিচ্ছেন ইটভাটায়। কেউ কেউ অনুমতি ছাড়াই সরকারি জায়গা ও খাল দখল করে গড়ে তুলেছেন ভাটা। সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পশ্চিম পাশে সরকারি জায়গা ও খাল দখল করে তৈরী করছেন আশা নামক ইটভাটা। পূর্ব পাশে পিবিসি নাম দিয়ে আরেকটি ভাটায় পুরোদমে চলছে উৎপাদন। তাদের নেই কোন কাগজপত্র বা অনুমতি। মালিক নিজেই বলেছেন, “ আমাদের সকল কাগজপত্র পক্রিয়াধীন, শুধু উৎপাদন রানিং।” তাদের পাশেই সওজে’র জায়গা থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বেকু দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছেন ভাটায়। সওজ দিয়েছে বাঁধা। তাদেরকে গত ২৫ নভেম্বর উৎপাদন কাজ বন্ধ রাখার মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি)। এ সড়কের পাশে কাগজপত্র বিহীন আরেকটি ইটভাটার নাম রিফান ব্রিকস। সেখানেও অবৈধভাবে চলছে উৎপাদন। সরকারি জায়গা দখল করে দিয়েছেন মাটির স্তুপ।
শাহজাদাপুরে রয়েছে একাধিক অবৈধ ইটভাটা। এর মধ্যে তৃষা ব্রিকস শাপলা বিল সংলগ্ন খাস জায়গার মাটি কাটছেন দিনরাত। গোচারণ ভূমি কেটে তৈরী করছেন খাল। উপজেলা প্রশাসনের ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ নভেম্বরের তালিকা সূত্রে জানা যায়, শুধু শাহবাজপুরেই রয়েছে ১২ টি অবৈধ ইটভাটা। এগুলোর অধিকাংশই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে। বেশ কয়েকটি ভাটা ভ্রাম্যমান আদালতে পড়ে দিেেছ জরিমানা। শাহজাদাপুরে ৫টি, চুন্টায় ৪টি, নোয়াগাঁও-এ ৩টি, পানিশ্বরে ১টি ও কালিকচ্ছে ৪টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মালিক জানান, জেলা থেকে উপজেলা পর্যন্ত ম্যানেজ করেই উৎপাদন শুরু করেছি। বৈধ কাগজ না থাকলে কি হবে আমাদের খরচের কোন শেষ নেই। সরাইল উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মইনুল আবেদীন বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। তালিকা করে পর্যায়ক্রমে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।