ইকবাল আজাদ হত্যা মামলার রায়ে সন্তুষ্ট নন স্ত্রী শিউলি আজাদ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদ হত্যা মামলার রায়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হননি তাঁর স্ত্রী উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলি আজাদ)। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হালিম উল্লাহ চৌধুরী গতকাল বুধবার বিকেলে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এতে সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আরও ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম বলেন, ‘কয়েকজন আসামি ফাঁসির দণ্ড থেকে বেঁচে গেছেন। আরও তিন থেকে চারজনের ফাঁসি হতে পারত। এখনো মামলার রায়ের কপি পাইনি। রায়ের কপি পেলে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেব।’
ইকবাল আজাদ (৫০) ছিলেন উপজেলা সদরের কুট্টাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ছিলেন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। ১৯৯০ সালে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগদান করেন। ইকবাল আজাদের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী শিউলি আজাদ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন।
শিউলি আজাদ বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনজনের আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইকবাল আজাদ দলীয় কোন্দলে খুন হন। এ ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই প্রয়াত এ কে এম জাহাঙ্গীর আজাদ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেন। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৮ থেকে ১০ জনকে। পুলিশ ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর ২৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গতকাল আদালত ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া খালাস পেয়েছেন ১৩ জন। মামলায় মোট আসামি ছিলেন ২৯ জন। এর মধ্যে ২ জন মামলা চলার সময় মারা যান।
আদালত সূত্র জানায়, মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া চার আসামি হলেন সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর; উপজেলা যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি মাহফুজ আলী, মোকারম আলী এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তৎকালীন কমান্ডার ইসমত আলী।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, মো. সিজার, সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী, অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী মো. বাবু, মো. হারিস, মো. বকুল, মো. লিমন, মো. আবদুল্লাহ, মো. শরীফ ও মো. মিজানুর রহমান। অন্য ১৩ আসামি খালাস পান।