৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস
ডেস্ক ২৪::৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কোনও রকম আক্রমণ ছাড়ায়ই শত্রুমুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। ঐদিন ৯ মাসের যুদ্ধশেষে তদানীন্তন মহকুমা প্রশাসক অফিস সংলগ্ন চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা-জনতার এক সমাবেশে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধে পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী।
২ ডিসেম্বর থেকে পূর্বাঞ্চলীয় রণাঙ্গনের সিঙ্গারবিল, সালদা নদী, কসবা, আখাউড়া মুকুন্দপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণে পিছু হটতে থাকে পাক হানাদার বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এ অঞ্চলে যুদ্ধ চলে।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুনুর রশীদ জানান, ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া মুক্ত করে একই দিন মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ দক্ষিণ দিক থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্র বাহিনীর ৫৭তম মাউন্টেন ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানিসার সড়ক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। শহরের চতুর্দিকে মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর শক্ত অবস্থান থাকায় পাক বাহিনীরা পালিয়ে যায়।
তবে পাক বাহিনীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় তৎকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কেএম লুৎফুর রহমানসহ কারাগারে আটক থাকা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের পূনিয়াউট রেল গেইট, দক্ষিন পৈরতলায় রেল লাইন সংলগ্ন এবং কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। এছাড়া শহর ছেড়ে যাওয়ার সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা কলেজ হোস্টেল, অন্নদা স্কুল বোর্ডিং, বাজার ও গুদামসহ বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ করে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াহেদ খান লাবলু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার ৪৪ বছরেও জেলার বিভিন্ন বদ্ধ ভূমি সংরক্ষন করা হয়নি। প্রশাসনের উদাসিনতার কারনে মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি গুলো যেমন সংরক্ষিত করা যাচ্ছেনা তেমনি যে সকল স্মৃতি স্তম্ভ নির্মিত হয়েছে সে গুলোও রক্ষনা বেক্ষনের অভাবে মর্যাদা খানি হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক ডক্টর মোশাররফ হোসেন জানান, একাত্তুরের মুক্তিযোদ্ধের অনন্ন ভূমিকা পালন কারী এই জেলার অরক্ষিত বদ্ধ ভূমি সংরক্ষন করে আগামী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে যে সকল জায়গায় বদ্ধ ভূমি আছে তা রক্ষায় সরকারের স্মৃতি সৌধ নির্মানের পরিকল্পনা আছে। এদিকে দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক সাংকৃতিক সংগঠন দিন ব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করবে।