মৌড়াইলে অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণ, আদালতে মামলা-নির্মাণ কাজ বন্ধে পৌরসভার নির্দেশও উপেক্ষিত
নিষ্কণ্ঠক ভূমির মালিক হয়েও পৌর এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণে মানতে হয় পৌরসভা ইমারত আইন, পরিবেশ আইন। সেস্থলে মালিকানা নিয়ে আপত্তি থাকা ভূমিতেই ইমারত আইনকে উপেক্ষা করে এমনকি আদালতে চলমান মামলা, কাজ বন্ধে পৌরসভার নিষেধাজ্ঞাকেও তোয়াক্কা না করেই নির্মিত হচ্ছে বহুতল ভবন। শেষতক পৌর নির্মাণ বিধি মোতাবেক ভবন ভেঙে ফেলার দাবীতে করা হয়েছে আবেদন। এমনটি হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মৌড়াইল মহল্লায়।
মৌড়াইল মৌজার বি.এস ২২৯০ দাগের ভূমিতে কথিত দুই অংশীদার ইমারত আইনকে উপেক্ষা করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তারা হলেন দক্ষিণ মৌড়াইল মহল্লার (বউ বাজার সংলগ্ন মুন্সী বাড়ি) জুলফিকার হাকিমের স্ত্রী মোছা. জুয়েল বেগম ও ছানা উল্লাহ্’র স্ত্রী মোছা কাজল বেগম। আদালতে চলমান মামলা, কাজ বন্ধে পৌর কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞাকেও তোয়াক্কা করছেন না তারা। অবশেষে পৌর নির্মাণ বিধি ১৯৯৬ মোতাবেক ভবন ভেঙে ফেলার দাবীতে মৌড়াইল মহল্লার হাজী আবুল হােসেন ভূইয়ার স্ত্রী হাজী ছালেহা বেগম পৌর কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন দাখিল করেছেন।
পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের মৌড়াইল মহল্লার বাসিন্দা হাজী আবুল হােসেন ভূইয়ার স্ত্রী হাজী ছালেহা বেগম লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেন, মৌড়াইল মৌজার বি.এস ২২৯০ দাগের অন্দরে ০৪.৩৭ শতক ভূমিতে রেজি:কৃত দলিলমূলে মালিক স্বত্বান হয়ে তথায় পৌরসভার অনুমােদন নিয়ে তিন তলাবিশিষ্ট আবাসিক বিল্ডিং তৈরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু একই দাগের সংলগ্ন ভূমির কথিত অংশীদার মােছা. জুয়েল বেগম ও মােছা. কাজল বেগম ওই তিনতলা ভবনের ভূমিকে আকৃষ্ট করে সম্পূর্ণ বে-আইনী ও অবৈধভাবে নির্মাণ কাৰ্য শুরু করলে হাজী ছালেহা বেগম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে বন্টনের দাবীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে মোকদ্দমা (নং দে. ২৭১/২০২০ ইং) দায়ের করেন। তথাপিও তারা নির্মাণ কাজ চালাতে থাকলে তাদের বে-আইনী বিল্ডিং নির্মাণ কাজের বিরুদ্ধে পৌরসভায় লিখিত আবেদন করলে পৌর কর্তৃপক্ষ সরেজমিন তদন্তে অভিযােগের সত্যতা পেয়ে বহুতল ভবন নির্মাতাদেরকে পৌর কর্তৃপক্ষ (ব্রাহ: পৌর/প্রকৌ:বি:/৩৭৬, তারিখ: ২৩.০৮.২০২১ খ্রি.)স্মারকমূলে অনুমােদনবিহীন নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি উক্ত অনুমােদনবিহীন নির্মাণ কাজ কেন অবৈধ বলে বিবেচিত হবে না তৎমর্মে কারণোল্লেখে লিখিতভাবে পৌর কর্তৃপক্ষকে জনানাের জন্য পত্র প্রদান করেন। কিন্তু তারা আজ অবধি পৌর কর্তৃপক্ষের নােটিশের বিষয়ে কোন কর্ণপাত না করে উক্ত অবৈধ অনুমােদনবিহীন বিল্ডিংয়ের নির্মাণ কার্য অব্যাহত রেখেছেন। তৎপ্রেক্ষিতে মােছা. জুয়েল বেগম ও মােছা. কাজল বেগমের নির্মাণাধীন বিল্ডিংটি অনুমােদন বিহীন অবৈধ বিল্ডিং হিসেবে ঘােষণা করে পৌর নির্মাণ বিধি ১৯৯৬ অনুযায়ী ভেঙে ফেলার প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে হাজী ছালেহা বেগম পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট বিগত ২ সেপ্টেম্বর’২১ লিখিত আবেদন করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কাউছার আহমেদ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘হাজী ছালহা বেগমের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে অনুমোদনবিহীন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে জুয়েল বেগম ও কাজল বেগমকে অনুমোদনবিহীন কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়। এমনকি তাদের ‘নির্মাণ কাজ কেন অবৈধ বলে বিবেচিত হবে না’ তৎমর্মে সাত দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য চিঠিও দেয়া হয়। কিন্তু তারা আজও চিঠির জবাব দেয়নি। অভিযোগকারী হাজী ছালেহা বেগম নতুন করে আরেকটি আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’