বিচারকের বিরুদ্ধে অশালীন স্লোগান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরও ২১ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের ২১ জন আইনজীবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। ৩ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা ও সমন জারির পর গত ৫ ও ৮ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিরুদ্ধে অশালীন স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ২৩ জানুয়ারি তাদেরকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২১ জন আইনজীবীকে ২৩ জানুয়ারি বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হয়ে তাদের আচরণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবীদের অসদাচরণের জন্য কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যক্রম শুরু করা হবে না তার কারণ ব্যাখ্যা করতে একটি রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বেঞ্চে পাঠানোর পরে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সমন আদেশ এবং আদালত অবমাননার রুল জারি করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ শারমিন নিগার গত ৫ ও ৮ জানুয়ারি আদালত প্রাঙ্গণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারকের বিরুদ্ধে ২১ জন আইনজীবীর মিছিলে অশালীন স্লোগান দেওয়ার ঘটনা বর্ণনা করে আবেদন করার পর প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের বেঞ্চকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলেন।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি হাইকোর্টের একই বেঞ্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও অন্য ২ আইনজীবীকে তলব করে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এর আদালতকক্ষে চিৎকার ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এবং ২ জানুয়ারি বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও তিরস্কার করার জন্য ১৭ জানুয়ারি আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. তানভীর ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক (প্রশাসন) মো. আক্কাস আলী এবং আইনজীবী জুবায়ের ইসলামকে আগামী ১৭ জানুয়ারি বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হয়ে তাদের আচরণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তানভীর, আক্কাস ও জুবায়েরকে বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ ও আদালত কক্ষে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যক্রম শুরু করা হবে না তার কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘তানভীর, আক্কাস ও জুবায়েরের নেতৃত্বে আইনজীবীদের কিছু অংশ একটি মামলার বিষয়ে গত ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালতে যান। আইনজীবীরা ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ ফারুককে মামলাটির শুনানি করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু বিচারক সেই সময় তার আদালতের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি শুনতে অস্বীকৃতি জানান।’
তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘বিচারক আইনজীবীদের কথা শুনতে অস্বীকৃতি জানালে এর প্রতিবাদে আইনজীবীরা আদালত কক্ষে চিৎকার, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ফারুক এবং আদালতের কর্মকর্তাদের তিরস্কার করে। এর ফলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত চেয়ে একটি চিঠি পাঠান।’
‘ঘটনার ভিডিও ফুটেজসহ নথিপত্র সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে,’ তিনি যোগ করেন।