নাসিরনগরের মন্দির ভাংচুরের ঘটনায় নিরপরাধ বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে জড়িয়ে অভিযোগ পত্র দাখিলের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির বিবৃতি
সামাজিক গণমাধ্যম ফেইসবুকে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য ইসলাম ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জেরে গত ৩০/১০/২০১৭ইং তারিখে নাসিরনগর উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ীঘর, মন্দির ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনায় দীর্ঘ ১৩ মাস পর ২২৮ জনের নামে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়।
আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলাম আবারও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ন মানসিকতা প্রসূত উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর নোংরা খেলায় নাসিনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. হান্নান সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জামাল হোসেন সাবেক চেয়ারম্যান, সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আমিরুল হোসেন চকদার, নাসিরনগর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ নাসির উদ্দিন (নাসির) সহ স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ নিরীহ, নিরপরাধ মানুষের নাম জড়িয়ে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়।
উল্লেখ্য যে, গত বছর ঘটে যাওয়া উক্ত ন্যাক্কার জনক ঘটনার পর দেশে বিদেশে নিন্দার ঝড় শুরু হয়। দেশ, জাতি ও বিশ্ব মিডিয়ায় স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয় ঘটনার মুল কারণ উপজেলা ও জেলা আওয়ামীলীগের দীর্ঘদিনের চলতে থাকা অভ্যন্তরীন নেতৃত্বের কোন্দল যা বিভিন্ন নিরপেক্ষ তদন্ত টিমের পর্যবেক্ষণও ছিল তাই। আরোও উল্লেখ যে, ঘটনার পর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের এমপি ও নাসিরনগরের মন্ত্রীর নেতৃত্বের কোন্দলের ফলে বহিষ্কার ও পাল্টা বহিষ্কারের ঘটনা ঘটে যাহা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ফলাও করে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়, এমনকি একে অপরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার জন্য পরস্পরকে দোষারূপ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত ঘটনায় এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের বিরুদ্ধে মিছিল, পাল্টা মিছিল মানববন্ধন করে, যাহা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়।
আওয়ামীলীগ তাদের নিজেদের দ্বারা পরিকল্পিত ভাবে সৃষ্ট ঘটনা আড়াল করে ও জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে নিরপরাধ বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের নামে উপরের আদেশে আদিষ্ঠ হয়ে দীর্ঘ ১৩ মাস পর ফরমায়সি অভিযোগ পত্র দাখিল করে।
এখানে গুরত্বের সাথে বিবেচ্য বিষয় এই যে, ঘটনার পর নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আমিরুল হোসেন চকদারকে বাসা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ডেকে নিয়ে থানায় আটক করা হলে উক্ত সংবাদ প্রচার হওয়ার সাথে সাথেই স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ এমনকি মন্দিরের পুরোহিত সহ বিপুল সংখ্যক লোকজন থানায় উপস্থিত হয়ে নিরপরাধ আমিরুল হোসেন চকদারকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে, যাহা পত্র পত্রিকায় ফলাও করে পর দিন প্রকাশিত হয়। এরপরেও তাকে উল্লেখিত ঘটনায় দায়েরকৃত জি.আর ২৭৮/১৬ এবং জি.আর ২৭৯/১৬ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে জি.আর ২৭৮/১৬ মামলার বাদী ও নাসিরনগর গৌর মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী এবং জি.আর ২৭৯/১৬ মামলার বাদী ও নাসিরনগর দত্তবাড়ী মন্দিরের স্বত্তাধিকারী কাজল জ্যোতি দত্ত বিজ্ঞ আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে জি.আর. ২৭৮/১৬ইং মামলায় বিগত ১৬/১১/২০১৬ইং তারিখে বাদী নির্মল চৌধুরী এবং জি.আর ২৭৯/১৬ইং মামলায় বিগত ১৭/১১/২০১৬ইং তারিখে বাদী কাজল জ্যোতি দত্ত লিখিত আবেদনের মাধ্যমে নির্দোষ আমীরুলকে একজন পরিচ্ছন্ন সৎ লোক এবং তাদের সুখে দুঃখে সর্বদা পাশে পাওয়া অতি আপনজন হিসেবে উল্লেখ করে নির্দোষ বলে দাবী করে এবং জামিন পাইতে তাদের কোন আপত্তি নাই মর্মে উল্লেখ করলেও তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ জহিরুল হক খোকন উক্ত অভিযোগ পত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. হান্নান সাবেক চেয়ারম্যান, সহ-সভাপতি জামাল হোসেন সাবেক চেয়ারম্যান, সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিরুল হোসেন চকদার ও উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ নাসির উদ্দিন (নাসির) সহ নিরীহ, নিরপরাধ ও নির্দোষ ব্যক্তিদের নাম জড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে তাদেরকে অত্র মামলার দায় হইতে অব্যাহতি দানের জন্য জোর দাবী জানায়। সেই সাথে উক্ত ন্যাক্কার জনক ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য জোর দাবী জানানো হয়।প্রেস বিজ্ঞপ্তি