সম্মেলন বাতিলের দাবিতে একাংশের মশাল মিছিল
ত্যাগীদের বাদ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে বিএনপির সম্মেলন করতে দেয়া হবে না
ত্যাগী-নির্যাতিতদের বাদ দিয়ে আগামী (১ ফেব্রুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে জেলা বিএনপির সম্মেলন করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতাকর্মীরা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাতে সম্মেলনের প্রতিবাদে আয়োজিত এক মশাল মিছিল থেকে এই হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
এসময় মশাল মিছিলটি শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকা থেকে বের হয়ে কালিবাড়ি মোড়, টিএরোড, কোর্ট রোড, কুমারশীল মোড়সহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে লোকনাথ টেংকের পাড় মাঠ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল শেষে বক্তারা জানান, দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করে যারা কারা নির্যাতিত হয়ে পরিবার-পরিজন হারিয়েছে, শত ত্যাগ-তিতিক্ষা শিকার করেছে তাদেরকে বাদ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। মূলত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিএনপির লেবাসধারী কবির আহমেদ ভূঁইয়ার কৌশলে একটি মহল এই সম্মেলনের আয়োজন করতে চাচ্ছে।
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবিএম মমিনুল হক বলেন, ‘আমাদের দাবি একটি স্বচ্ছ ভোটার তালিকা। ভোটারদের মধ্যে আওয়ামী দোসর ৩শ’ থেকে ৪শ’ রয়েছে। জাতীয় পার্টির রয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে মাঠের ত্যাগী পরীক্ষিত আন্দোলন সংগ্রামে জেল খাটা নেতাকর্মীদের সম্মেলনে ভোটার বানাতে হবে। ভোটার লিস্ট তৈরি করার পরে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। তাহলে সেই সম্মেলনে আমরাও অংশগ্রহণ করব। আমাদের দলনেতা তারেক রহমান সাত সমুদ্র তেরো নদী পার থেকে এ দলকে সুসংগঠিত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘দলের থেকে পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করে তাদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে যেন স্বচ্ছ কমিটি করা হয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আমাদের নেতার নির্দেশ উপেক্ষিত হচ্ছে। এ উপেক্ষাকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন না করে আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি জেলা বিএনপির একটি পক্ষ অবৈধ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এ সম্মেলন আয়োজনটিকে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ। কোনোভাবেই এ সম্মেলন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে হতে দেয়া হবে না।’
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. শামীম মোল্লা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বগুড়ার আদলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সম্মেলন করতে হবে। অন্যথায় এই অবৈধ সম্মেলন প্রতিহত করা হবে। তারা সম্মেলনের আগের দিন পর্যন্ত প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেন। কোনোভাবেই এ অবৈধ সম্মেলন হতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মমিনুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আজম, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসীম উদ্দিন রিপন, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, বিএনপি নেতা মো. নিয়ামুল হক, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি রাশেদ কবির আকন্দ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর ও ১৮ জানুয়ারি জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এক পক্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিলেও অপর পক্ষের অনড় বিরোধিতার কারণে দুটি তারিখ পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।