Main Menu

জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের টেন্ডার কেলেংকারি, টক অব দ্যা টাউন

+100%-

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের টেন্ডার নিয়ে কেলেংকারি হয়েছে। এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে জাতীয় প্রথম শ্রেণীর দৈনিক প্রথম আলো, যুগান্তর, সমকাল, মানবজমিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম।

মানবজমিন শিরোনাম করেছে ”ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে দরপত্র জমা দানে বাধা’

সংবাদ মাধ্যমটি বিস্তারিত খবরে বলেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের ছয়টি কাজের দরপত্র জমাদানে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দরপত্র বিক্রি হয় ২২৫টি। কিন্তু গতকাল(রবিবার) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৮টি দরপত্র জমা পড়ে। নিজেদের পছন্দের লোককে কাজ পাইয়ে দিতে জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের বাধার কারণে গতকাল জেলা সদর হাসপাতালে ঠিকাদারেরা দরপত্র জমা দিতে পারেনি বলে কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেন। গত শনিবার রাতে সমঝোতার কথা বলে অধিকাংশ ঠিকাদারের কাছ থেকে দরপত্র সংগ্রহ করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওষুধপত্র, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, লিলেন সামগ্রী, গজ-ব্যান্ডেজ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রাসায়নিক সামগ্রী, এমএসআর আসবাব সামগ্রী এবং এমএসআর যন্ত্রপাতি মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৫০ শয্যার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল গত ২০শে জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে এই দরপত্র আহ্বান করে। প্রায় অর্ধশতাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছয়টি কাজের বিপরীতে ২২৫টি দরপত্র কেনে। এর মধ্যে ছয়টি কাজের জন্য ছয়টি গ্রুপের তিনটি করে দরপত্র জমা পড়েছে।

গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা সদর হাসপাতাল চত্বরে এবং হাসপাতাল এলাকার ভেতরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নার্সিং ইন্সটিউটের প্রধান ফটকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়ে বসে রয়েছে। হাসপাতালের প্রধান ফটকে জেলা ছাত্রলীগের নেতা দাঁড়িয়ে ছিলেন। হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের বাইরে রাখা দরপত্র জমা দেয়ার বাক্সে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বসে রয়েছে। দরপত্র জমা দেয়ার বাক্সের সামনে জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী অবস্থান করছেন। তবে হাসপাতাল এলাকার কোথাও কোনো পুলিশকে দেখা যায়নি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা সহকারি পরিচালক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলার সময় ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুম বিল্লাহ আসেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমাদের এক কর্মী অসুস্থ। তাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে অবস্থান করছেন। টেন্ডার সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না।

দরপত্র জমা দেয়ার বাক্সের উপরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বসে ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা তো অনেক কিছুই দেখেন।

ঢাকার ঠিকাদার মো. মহসিন উদ্দিন বলেন, আমি ও আমার ঢাকার বন্ধু সাজ্জাদ মুন্সি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ট্রপিক্যাল এন্টারপ্রাইজ ও আহমেদ এন্টারপ্রাইজের নামে ১২টি দরপত্র কিনি। গত শুক্রবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম বিল্লাহসহ বেশ কয়েকজন এসব কাজের বিষয়টি সমঝোতা হবে জানিয়ে ঠিকাদারদের গত শনিবার রাতে শহরের আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে গিয়ে দরপত্র জমা দিতে বলেন। পরে আমি সেখানে পাঠালে তারা দরপত্রগুলো জমা নিয়ে নেয়। সেখানে রাতভর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পুনিয়াউট এলাকার হেলাল উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক তানজিল আহমেদ, প্রচার সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামসহ অনেক নেতাকর্মীরা ঠিকাদারদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

মহসিন উদ্দিন বলেন, কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে ৫৬ লাখ টাকা নেয়া হয়েছে। দরপত্র কেনার পর যেসব ঠিকাদাররা কাজ পাবেন না তাদের মাঝে ৪০ লাখ টাকা ভাগ ভাটোয়ারা করে দেয়া হবে। তিনি আরো জানান, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বাঁধার কারণে সকালে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে পারিনি। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি। তিনি পুনরায় দরপত্র আহবানের দাবি জানান।

জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি সবসময় আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে রাত নয়টা/দশটা পর্যন্ত থাকি। তবে গত শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে আমি বাসায় চলে আসি। এসব বিষয়ে আমি কিছু জানি না। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা সহকারি পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ছয়টি কাজের বিপরীতে ১৮টি দরপত্র জমা পড়েছে। পরে এগুলো যাছাই বাছাই করা হবে। দরপত্র জমা না দিতে পারা প্রসঙ্গে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি। বাইরের অবস্থা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো বাইরে দেখার দায়িত্ব আমার না। পুলিশের অনুপস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, পুলিশ পাঠানোর জন্য দরখাস্ত দেয়া হয়েছে।

একই বিষয়ে প্রথম আলো লিখেছে, দরপত্র জমা দিতে বাধা ছাত্রলীগ যুবলীগের ?

সমকাল শিরোনাম করেছে, দেড়কোটি টাকার কাজ ৫৬ লাখ টাকায় সমঝোতা!

যুগান্তর তাদের শিরোনামে ছাত্রলীগ যুবলীগের বিরুদ্ধে দরপত্র ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছে।






Shares