Main Menu

সাবেক উপমন্ত্রী আলহাজ্ব এড. হুমায়ুন কবীরের স্মরণসভায় _মোকতাদির চৌধুরী এমপি

গণমানুষের নেতা হয়ে গণমানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে তা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথম তিনিই দেখিয়েছিলেন

+100%-

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, জননেতা এড. হুমায়ুন কবিরের সাথে আমার যোগাযোগ হয় ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের সময়। তিনি ছিলেন আমার রাজনৈতিক সতীর্থ। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিলগ্নে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে স্থানীয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরি করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যারা দলের বাইরে গিয়ে সংগ্রাম প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন মরহুম এড. হুমায়ুন কবীরও তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তাঁর মধ্যে সেদিন আমরা দেখেছিলাম এক রুদ্ররূপে। তিনি জাপার রাজনীতির সময় সংসদে দাড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার চেয়েছিলেন যা আজকে এক উজ্জ্বল ইতিহাস।

হুমায়ুন কবির ছিলেন প্রকৃত একজন দেশপ্রেমিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজনৈতিক ব্যক্তি। একই সাথে তিনি ছিলেন একজন ধর্মানুরাগী ব্যক্তিত্ব। শিক্ষাক্ষেত্রের উন্নয়ন, সামাজিক শৃঙ্খলা সুরক্ষা এবং মানুষে মানুষে সম্প্রীতি গড়ে তুলতে এড. হুমায়ুন কবির ছিলেন আলোকিত মানুষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনীতিতে আমার জন্য হুমায়ুন কবিরই প্রথম সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। সেজন্য আজকে তাঁকে আমি কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ করছি। জীবনের শেষ দিনগুলোতে শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি অনেক কথা আমাদের বুঝাতে পারতেন না। এতদসত্ত্বেও তিনি প্রতিদিন মানুষের কাছে ছুটে গেছেন, মানুষের সমস্যা দুর্দশা দুর করতে চেষ্টা করেছেন।

তিনি শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার উদ্যোগে পৌরসভার দুইবারের সাবেক সফল চেয়ারম্যান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সশস্ত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গণমানুষের নেতা, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক উপমন্ত্রী আলহাজ্ব এড. হুমায়ুন কবীরের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নায়ার কবিরের সভাপতিত্বে মোকতাদির চৌধুরী এমপি আরো বলেন, হুমায়ুন কবির ছিলেন এক বিদোৎসাহী ব্যক্তি। আমাদের স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরর সবগুলোতেই কোন না কোনভাবে এড. হুমায়ুন কবিরের অবদান রয়েছে। আমি উপ-নির্বাচনে এবং মিসেস নায়ার কবির পৌর মেয়র পদে মনোনয়ন পাবার পর তিনি যে কত খুশী হয়েছিলেন তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। তিনি বলেন, এককালে আমাদের পশ্চাতপদ উপজেলা বিজয়নগরে হুমায়ুন কবির যে কতরকম কাজ করেছেন তা দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। আমি বিজয়নগর এলাকায় যত কাজ করেছি এসবের অনেকগুলোতে হুমায়ুন কবির সাহেবের অনুরোধ ও পরামর্শ ছিল। গণমানুষের নেতা হয়ে গণমানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে তা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথম তিনিই দেখিয়েছিলেন। আমি জননেতা হুমায়ুন কবিরের রূহের মাগফেরাত করি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।

মোকতাদির চৌধুরী এমপি তার বক্তব্যে, নির্মাণাধীন কোর্টরোডস্থ সুপার মার্কেটটি হুমায়ুন কবিরের নামে নামাংকিত করার প্রস্তাব করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ রুহুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ রেজাউল কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও স্মরণসভা উদযাপন কমিটির আহবায়ক আলহাজ্ব মোঃ ফেরদৌস মিয়া। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুরাদ খান, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এড. লোকমান হোসেন, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডোর সাবেক কমান্ডার আলহাজ্ব আবু হোরায়রাহ্ প্রমুখ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক দিনদর্পণের নির্বাহী সম্পাদক নজরুল ইসলাম শাহজাদা’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি তাজ মোঃ ইয়াছিন, হাজী মোঃ হেলাল উদ্দিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মনজুরুল আলম, সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কালাম ভূইয়া, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর হোসনে আরা বেগম, হালিমা আক্তার কাজল, সালমা বেগম, মাহমুদা রহমান, কাউন্সিলর মোঃ জামাল হোসেন, মোঃ আবুল বাশার, মোঃ খবির উদ্দিন, আলহাজ্ব মিজানুর রহমান আনছারী, মোঃ কাউসার, ওমর ফারুক জীবন, শাহ মোঃ শরিফ, মুফতি মাকবুল হোসেন, আব্দুল হাই ডাবলু, রফিকুল ইসলাম নেহার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন পৌরসভার সচিব মোঃ সামছুদ্দিন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কাউসার, সহকারী প্রকৌশলী কাউসার আহমেদ, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমান, উপ সহকারী প্রকৌশলী সুমন দত্ত, পবিত্র ভূষণ পাল, আতাউর রহমান, মোঃ ইদ্রিস মিয়া অপু।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার প্রয়াত নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এড. হুমায়ুন কবিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনৈতিক অঙ্গণে একজন সমাজ সংস্কারক ব্যতিক্রমধর্মী রাজনৈতিক নেতা হিসাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এক সময় শহরবাসীর কাছে পৈরতলা একটি আতঙ্কের নাম ছিল। কিন্তু হুমায়ুন কবির প্রথম পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি পৈরতলাকে উজ্জ্বল করে আজকের পর্যায়ে সমাদৃত গ্রামে উন্নীত করেন।

সভাশেষে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট আলেম হযরত মাওলানা মুফতি কেফায়েত উল্লাহ্ নূর।






Shares