ইব্রাহিমের বাসভবনের রুমে রুমে চালের মজুদ
মেসার্স ইব্রাহীম ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ ইব্রাহীম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার চাল ব্যবসায়ীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তার উপরই চালের দাম কম বেশী হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে। এমন দাবি আনন্দ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাবুল মিয়ার। রবিবার আনন্দ বাজারে চালের অবৈধ মজুদ ও অতিরিক্ত মূল্যে চাল বিক্রি বন্ধে র্যাবের সহযোগিতায় অভিযান চালায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পঙ্কজ বড়ুয়ার ভ্রাম্যমান আদালত।
তখন ইব্রাহীম ট্রেডার্সের চালের মজুদের পরিমান জানতে চায় ভ্রাম্যমান আদালত। কিন্তু প্রায় ১ ঘন্টায়ও চালের মজুদের প্রয়োজনীয় চালান উপস্থাপন করতে পারেনি মোহাম্মদ ইব্রাহীম। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় প্রতিদিনের হিসেব ও চালান ঠিকমত সংরক্ষণ করতে পারিনি। ভ্রাম্যমান আদালত তার কাছে মৌখিক ভাবে জানতে চান আপনার কাছে কি পরিমান চাল মজুদ আছে? তিনি আদালতকে ৬৩০০ বস্তার মত তার কাছে মজুদ রয়েছে জানান, যার মধ্যে ২২০০ বস্তা ঘাটুরা এলাকায় অন্য একটি গুদামে সংরক্ষিত আছে বলেও জানান তিনি। আদালত তখন সে মজুদের কাগজ দেখতে চান। কিন্তু মোহাম্মদ ইব্রাহীম তাও দেখাতে পারেননি।
তখন আদালত তাকে নিয়ে ঘাটুরা এলাকায় গিয়ে গোডাউনটি সিলগালা করে দেয় এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে আপিল করতে বলে।
সেখানে থাকা অবস্থায় ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে তথ্য আসে এটি ছাড়াও মোহাম্মদ ইব্রাহীমের চালের মজুদ রয়েছে। প্রথমে স্বীকার না করলেও আদালতের জেরার মুখে তিনি স্বীকার করেন তার বাড়িতে খাওয়ার জন্য অল্প কিছু চাল মজুদ আছে। আদালত তখন নাটাই গ্রামে অবস্থিত মোহাম্মদ ইব্রাহীমের বাড়িতে যান।
সেখানে গিয়ে দেখা যায় প্রায় ১৫০ শতক জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত বাড়ির ভেতরের উত্তর পশ্চিম কোণায় দুই তলা বাড়ির বিভিন্ন রুমে ৪৪৭ বস্তা চাল মজুদ করে রাখা আছে।
এ চালেরও তিনি কোন কাগজ দেখাতে পারেন নি। তার কাছে প্রশ্ন ছিল, এত পরিমান চাল কেউ খাবার জন্য সংরক্ষণ করেন কিনা? তখন তিনি , চালগুলো বিক্রির জন্য রেখেছিলেন বলে স্বীকার করেন।
পরে ভ্রাম্যমান আদালত তাকে অবৈধ মজুদের দায়ে ভোক্তা অধিকার আইনেএক লাখ টাকা জরিমানা করে।