বুকের গভীরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া:: – প্রসনজিৎ দাস ক্রিকেটার, অনুর্ধ্ব-১৯, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।
সবার বুকেই বাংলাদেশের একটা মানচিত্র রয়েছে। আমরো তাই। একজন খেলোয়ার বেশে দেশকে প্রথম উপলব্ধি অনুর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ, দুবাইয়ে। সালটা ২০১৩। বাংলাদেশের হয়ে দেশের জার্সি গায়ে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে। আর ওই দিনটি ছিল বাংলাদেশকে নিজের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার প্রথম দিবস। ওই সময়গুলো শুধুই অনুভব করা যায়। ভালো লাগা কাজ করছিল একজন বাংলাদেশি হিসেবে কিন্তু তারও গভীর থেকে যেটা শব্দটি নাড়া দিয়েছিল, তা হচ্ছে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এসছি। বাংলাদেশের ১১জন সদস্যের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছি। শৈশবের সময়গুলো বেড়ে ওঠা একান্তই তিতাসের ঘাঁ ঘেঁষে। রাতে ঘুমে তিতাসের শব্দ, ভেসে আসা বাতাসের শিহরণ, আবার ভোরে সোনালী রোদের ঘুম ভাঙ্গানো। উপলব্ধিগুলো তখন থেকেই। পাশের প্রাইমারি স্কুলের মাঠে ভোর থেকে ব্যাট-বল নিয়ে নেমে যাওয়া, শুষ্ক মৌসুমে তিতাসের ওপারে দলবেঁধে খেলতে যাওয়া, বোর্ডিং মাঠে সারা দিন পড়ে থাকা, এমনি করে আস্তে আস্তে এক পর্যায়ে জেলা থেকে জাতীয় পর্যায়ে পৌছানো। অনুর্ধ্ব-১৯ পর্বে খেলতে অনেক দেশেই যাওয়া হয়েছে, কিন্তু ভালোলাগা সেই বাংলা মায়ের কোল আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ধর্ম-বর্ণের উর্ধ্বে থেকে সর্বোপরী একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সন্তান হিসেবে নিজেকে গর্ববোধ করি। দীর্ঘ সময় আর সংগ্রামে অর্জিত বাংলাদেশ। ৩০ লক্ষ মূল্যবান প্রানের বিনিময়ে মায়ের ভাষা বাংলার জন্য ৯ মাসের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি ১৬ ডিসেম্বর। এ দেশকে স্বাধীন করতে গিয়ে এবং বাংলা ভাষার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার শান্তি ও বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত হয় ৮ ডিসেম্বর। এ দিনটিকে ঘিরে ‘আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ যে উদ্যোগগুলো গ্রহন করেছে, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়াল ‘রঙিন হবে আমাদের স্কুল’ নামকরণের অনুষ্ঠানটি সঠিক ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে সে কামনা করি। এ সংগঠনের কার্যক্রমের সাথে কিছুটা সম্পৃক্ত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। স্ব স্ব অবস্থান থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া তথা বাংলাদেশের হয়ে আরো এগিয়ে যাব এ আমার সংকল্প। ভালো থেকো বাংলাদেশ।