যে কারনে চিরকুমার ছিলেন ঢাবির সাবেক ভিসি মনিরুজ্জামান মিঞা, শুনলে চোখে জল চলে আসবে!
ডেস্ক ২৪:: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা তাঁর প্রেমিকাকে ভালোবেসে কোনোদিন বিয়ে করেননি। একটি ভুল বুঝাবুঝির কারণে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন মনিরুজ্জামানের প্রেমিকা। সেই থেকে আজীবন অকৃতদার ছিলেন এই শিক্ষক। আজ ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যটাসে এমনটি জানিয়েছেন সাংবাদিক ফজলুল বারী।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা মারা যান।
এরপর ফেসবুকে ফজলুল বারী লিখেন-
প্রফেসর মনিরুজ্জামান মিঞা মারা গেছেন। নিপাট একজন ভদ্রলোক মানুষ ছিলেন তিনি। তাকে শিরোনাম করে আমার একটা লেখা নিয়ে এক সময় আলোড়ন হয়েছিল। লেখাটার শিরোনাম ছিল “মনিরুজ্জামান মিঞা বিড়াল ভালোবাসেন”! ঘটনাটা একটু সবার সংগে শেয়ার করি আজ।
মনিরুজ্জামান মিঞা যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন সহপাঠিনী এক হিন্দু মেয়ের সংগে তার প্রেম হয়। এক পর্যায়ে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।
পরিকল্পনাটি ছিল অমুক দিন অমুক সময়ে তারা আলাদা আলাদাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল স্টেশনে আসবেন। এরপর তারা অমুক ট্রেনে চড়ে পালাবেন। পরিকল্পনামতো প্রেমিকা মেয়েটি স্টেশনে আগেভাগে চলে এসেছিল। কিন্তু মনিরুজজামান মিয়া যে পথে আসেন তার আসতে কিছুটা দেরি হয়। এরমাঝে ট্রেন চলে এসেছে স্টেশনে! প্রেমিকা মেয়েটি মনে করে প্রেমিক মনিরুজ্জামান মিঞা তার সংগে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে! এরপর ঘটে যায় সেই করুণ বিয়োগাত্নক ঘটনা! প্রেমিককে ভুল বুঝে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে মেয়েটি! মনিরুজ্জামান মিঞা ছুটতে ছুটতে স্টেশনে পৌঁছে মানুষের ভিড দেখেন! ভিড় ঠেলে দেখেন সব শেষ! দেখেন তার প্রেমিকার সদ্য ট্রেনে কাটা রক্তাক্ত লাশ!
এই ঘটনাটি তার জীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে! জীবনে আর কখনো বিয়ে করেননি মনিরুজ্জামান মিঞা! বিড়াল ভালোবাসতো তার প্রেমিকা। প্রেমিকার স্মৃতি ধরে রাখতে বিড়াল পোষা শুরু করেন প্রেমিক মনিরুজ্জামান। তিনি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন, তখনো তার অনেকগুলো পোষা বিড়াল ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসায়। এই বিড়ালগুলোই ছিল তার প্রেম। তার নিহত প্রেমিকার স্মৃতি।
গত কিছুদিন আগে ফেসবুকে একটা পোষ্ট দেখে মনিরুজ্জামান মিঞাকে নিয়ে আবার লিখেছিলাম। তার সম্পত্তি গ্রাস করতে তাকে এক বাসায় বন্দী করে রেখেছে তার কোন এক স্বজন! ওই অবস্থায় বন্দী থাকতে থাকতে তার মধ্যে মানসিক বৈকল্যের সৃষ্টি হয়। আমার আশা ছিল পোষ্টটি দেখে তাকে ওই অবস্থা থেকে উদ্ধারে এগিয়ে আসবে বিএনপির কেউ একজন। কারন মনিরুজ্জামান মিঞা বিএনপির শিক্ষক নেতা, খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা ছিলেন। কিন্তু বিএনপি বা কেউ তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি! মনিরুজ্জামান মিঞার স্মৃতির প্রতি অনেক শ্রদ্ধা। ভালো থাকুন স্যার।