নবীনগরে নৌ দুর্ঘটনায় নিখোঁজ শিশুটির লাশ ২৯ ঘন্টা পর উদ্ধার



মিঠু সূত্রধর পলাশ, নবীনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের তিতাস নদীতে স্পিডবোটের ঢেউয়ে নৌকা ডুবে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় তাঁদের আট বছরের মেয়ে মারিয়া আক্তার নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ২৯ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ওই শিশুর লাশ ভেসে ওঠে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক ও নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ শিশুর লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার বেলা একটার দিকে নবীনগর উপজেলার পূর্ব ইউনিয়নের মোহল্লা গ্রামে তিতাস নদীতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে উপজেলার কাউতলা গ্রামের মো. রিয়াদ (৩৫) ও তাঁর স্ত্রী লিজা আক্তার (২৩) মারা যান। এসময় নিখোঁজ হয় তাঁদের মেয়ে শিশু মারিয়া আক্তার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রিয়াদ পরিবার নিয়ে সিলেটে থাকতেন। রোববার স্ত্রী-সন্তানসহ সিলেট থেকে বেড়াতে নবীনগর উপজেলার মামাশ্বশুরের বাড়িতে যান। সোমবার সকালে রিয়াদ তাঁর পরিবারের লোকজনসহ একটি নৌকায় ১০-১২ জনকে নিয়ে উপজেলার পূর্ব ইউনিয়নের মোহল্লা গ্রাম থেকে পাশের ভৈরবনগরের উদ্দেশে তিতাস নদীতে ভ্রমণে বের হন। ভৈরবনগরে যাওয়ার পথে তিতাস নদীর সোনাপাড়া নামের স্থানে স্পিডবোটের ঢেউয়ে নৌকাটি উল্টে যায়। এতে নৌকায় থাকা রিয়াদ ও তাঁর স্ত্রী লিজা পানিতে ডুবে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় বাকিরা তীরে পৌঁছাতে সক্ষম হলেও রিয়াদ ও লিজার আট বছরের শিশু মেয়ে মারিয়া নিখোঁজ হয়। নৌকায় থাকা মো. শামছুল জানান, প্রতিবছরই তাঁরা নৌকায় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে নবীনগরে যান। কিন্তু এবার স্পিডবোটের ঢেউয়ে নৌকাটি উল্টে গেল। নবীনগর থানার ওসি আমিনুর রশিদ বলেন, নৌকাডুবির পর থেকে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান। সোমবার রাত পর্যন্ত তাঁরা উদ্ধার অভিযান চালান। মঙ্গলবার সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে ছয় সদস্যের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান চালায়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শিশুটির লাশ ভেসে ওঠে।
নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক জানান, নিহত রিয়াদ ও তাঁর স্ত্রী লিজার লাশ দাফনের জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষে ২০ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দুই পরিবারের সদস্যদের হাতে সহায়তার টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।