১০ মার্চ শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ
সারাদেশে ছবিসহ ভোটার তালিকার হালনাগাদের কাজ শুরু হবে এ বছরের ১০ মার্চ। প্রথম ধাপে দেশের ১৪০টি উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু হলেও শেষ ও চতুর্থ ধাপে ৯২ উপজেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে তা শেষ হবে।
বুধবার হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও ভোটার তালিকা প্রকল্পের (পিইআরপি) শীর্ষ কর্মকর্তারা সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, ‘১০ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে হালনাগাদ। এবার হালনাগাদের সময় ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ বছর হবে তাদেরও অন্তর্ভূক্ত করা হবে। আমরা তথ্য সংগ্রহ করে রাখবো। যতটুকু দরকার হবে ততটুকু ব্যবহার করবো।’
তবে ২০১৩ সালের শেষ দিকে নির্বাচন হলে ওই বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ হবে তাদের তথ্য নিয়েই ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকার পর সর্বশেষ হালনাগাদ হয় নবম সংসদের পর। দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার একসঙ্গে চার বছরের তথ্য একসঙ্গে সংগ্রহ হচ্ছে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক আখতারুজ্জান বলেন, ‘এ বছর মার্চ, জুন ও অক্টোবরে দেশজুড়ে ১৪০টি করে উপজেলায় এবং আগামী বছর জানুয়ারিতে ৯২টি উপজেলা ও সিটি করপোরেশনগুলোয় হালনাগাদে তথ্যসংগ্রহের কাজ শুরু হবে।’
বৃহস্পতিবারের নতুন ইসি’র প্রথম কমিশন সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে সময়সূচিগুলো গণমাধ্যমে তুলে ধরা হবে বলেও জানান তিনি।
ভোটার তালিকা হালনাগাদের ক্ষেত্রে ১৮ ও তদুর্ধ্ব বয়সী নতুন ভোটার, বাদপড়াদের অন্তর্ভূক্তি এবং স্থানান্তর, সংশোধন ও মৃতদের বাদ দিয়ে বর্তমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে।
প্রথম ধাপ : ১৪০ উপজেলায় তথ্যসংগ্রহ ১০ মার্চ শুরু হয়ে চলবে ২০ মার্চ। ছবি তোলা ও নিবন্ধন চলবে ২১ মার্চ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত।
দ্বিতী ধাপ : ১৯ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করে ১৪০ উপজেলায় ছবি তোলা ও নিবন্ধন চলবে ২৯ জুন থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত।
তৃতীয় ধাপ : ১ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর তথ্য সংগ্রহ শেষে ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত ছবি তোলা ও নিবন্ধন চলবে আরও ১৪০ উপজেলায়।
শেষ ও চতুর্থ ধাপ : ৯২টি উপজেলায় তথ্য সংগ্রহ চলবে ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। এখানে ছবি তোলা ও নিবন্ধন চলবে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।
ইসি কর্মকর্তারারা জানান, গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ তথা অন্তত ১০ শতাংশ ভোটার নতুন তালিকাভুক্ত হতে পারে। হালনাগাদে ৮৫ লাখ থেকে ৯০ লাখ ভোটার অন্তর্ভূক্ত হতে পারে ।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধন অনুযায়ী ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনের কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি সদ্য বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘নতুন কমিশনের ওপরই পড়ছে ভোটারতালিকা হালনাগাদের কাজ।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের হাতে আছে ৮ কোটি ৬০ লাখ ভোটারের তালিকা। ১৬ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৯ কোটির ওপরে। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।’
এদিকে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে ভোটার তালিকা আইনে কিছু সংশোধন আনতে গত ডিসেম্বরেই নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
উল্লেখ্য, গত দুই বছর (২০১০-২০১১) ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজটি অসম্পন্ন রাখে নির্বাচন কমিশন। এর কারণ হিসেবে কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতি বছর মাত্র এক মাস সময়ের মধ্যে এ কাজ করার বিদ্যমান আইনটি বাস্তবসম্মত নয়।
এ সম্পর্কে সদ্য বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের একটা পরিকল্পনা ছিল, জানুয়ারির দুই তারিখ থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করার। কিন্তু সেটা করতে হলেও ঢাকা সিটিকে বাদ রেখেই তা করতে হতো। ঢাকায় এ কাজ শুরু করতে গেলে এর দুই সিটি কর্পোরেশন’র নির্বাচন পরের কমিশন এসেও সরকার ঘোষিত সময়ে করতে পারবে না।’