Main Menu

স্ত্রীর স্বীকারোক্তিতে ৮ মাস পর কুমিল্লায় স্বামীর কংকাল উদ্ধার, আটক ৬

+100%-

_92ডেস্ক ২৪:: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় নিখোঁজের প্রায় ৮ মাস পর ময়নাল হোসেন (৩৫) নামের সৌদি প্রবাসীর মরদেহের কংকাল উদ্ধার করেছে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ। স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের বিরোধ ও সম্পত্তি বিষয়ক জটিলতায় খুন হয়েছেন ময়নাল হোসেন। এ ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার আকবপুর ইউনিয়নের জাড্ডা হাহাতি এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আজগর আলীর উপস্থিতিতে একটি ডোবার ৩ ফুট পানির নিচ থেকে মরদেহের কংকাল উদ্ধার করা হয়। নিহত ময়নাল হোসেন মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর নোহাটি গ্রামের মৃত: আব্দুল কাদিরের ছেলে।

3_1
নিহত ময়নাল
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, নিহত ময়নাল হোসেনের সাথে ১০ বছর আগে একই উপজেলার জাড্ডা হাহাতি গ্রামের তাছলিমা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের বৈবাহিক জীবনে তাদের ২টি সন্তান রয়েছে। ময়নাল সৌদিতে যাওয়ার পর প্রবাসে উপার্জিত অর্থ তাছলিমার নামে পাঠাতেন।

এদিকে প্রবাসী স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাছলিমা বেগম একই গ্রামের শরীফুল ইসলাম নামের এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।

গত বছরের ৩০ অক্টোবর ময়নাল হোসেন দেশে আসার পর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে কয়েকদিন অবস্থান করেন। ওই সময় বিদেশে থেকে পাঠানো অর্থের হিসাব এবং স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়।

এতে তার স্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামীকে হত্যার জন্য ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ৬ জনের সাথে চুক্তি করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত বছরের ১ নভেম্বর রাতে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করার পর খুনিরা কৌশলে ওই প্রবাসীকে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে বাড়ির অদূরে খাল পাড়ে নিয়ে হত্যা করে লাশ সেখানে ফেলে দেয়।

2_1
স্বামী হত্যায় অভিযুক্ত তাছলিমা
এরপর ওই প্রবাসীর স্ত্রী গত ৭ নভেম্বর মুরাদনগর থানায় স্বামী নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন ‘তার স্বামী ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেননি।’ এতে মুরাদনগর থানা পুলিশ জিডির সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করলেও ঘটনার রহস্য বের করতে পারেনি।

পরে ওই প্রবাসীর মা আমেনা খাতুন এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কুমিল্লা পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ এ অভিযোগের তদন্ত শুরু করেন। অভিযোগের সূত্র ধরে ডিবি পুলিশ প্রবাসী ময়নালের স্ত্রীর নিকটাত্মীয় জাকির ও জুয়েলকে গ্রেফতার করে। গত ৮ মার্চ কুমিল্লা নগরী থেকে ডিবির একটি টিম স্ত্রী তাছলিমা আক্তারকে গ্রেফতার করার পরই তার স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসে হত্যার ঘটনা। পরদিন গ্রেফতার করা হয় তাছলিমার প্রেমিক শরিফুল ইসলামকে।

গত ১০ মার্চ নিহতের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের নাম প্রকাশ করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

বর্তমানে কারাগারে আটক ওই প্রবাসীর স্ত্রী তাছলিমা আক্তার, তার নিকটাত্মীয় জাকির, জুয়েল ও পরকীয়া প্রেমিক শরিফুল ইসলামসহ অপর ২ আসামির স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে হত্যার পর লাশ গুম করার স্থানটির বিষয়ে ডিবি পুলিশ নিশ্চিত হয়। গত রোববার ডিবি পুলিশ আদালতে আবেদন করলে আদালত লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেয়। এদিকে ওই ডোবা পাহারার জন্য গত দুইদিন ধরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছিল।

আদালত মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য ফরেনসিক বিভাগকে ৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ ।

কুমিল্লা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুর আলম এ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি কুমেক হাসপাতাল ফরেনসিক মর্গে পাঠানো হয়েছে।






Shares