সরাইলে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ::তালাবদ্ধ ঘর থেকে ১৫ ঘন্টা পর উদ্ধার
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:সরাইলে যৌতুকের জন্য স্ত্রী রিপা আক্তার (২৭) কে শাররীক নির্যাতনের পর বসত ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৫ ঘন্টা পর আহত রিপাকে যৌতুক লোভী স্বামী দিনাছ মিয়ার (৩৭) ঘর থেকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ। গতকাল দুপুরে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চাকশার (বিলের পাড়) গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রিপা বাদী হয়ে সরাইল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এক হাজার টাকায় কোন মামলা নথিভুক্ত হয় না বলে পুলিশ রিপার অভিযোগ এফ আই আর করছেন না। এমন অভিযোগ বাদী ও তার স্বজনদের। তার উপর রয়েছে বিশেষ ব্যক্তির তদবির। অভিযোগ পত্র, ভুক্তভোগী গৃহবধু ও তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আজ থেকে ৯-১০ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর নদ্দাপাড়া এলাকার আবুল কাশেম মিয়ার তৃতীয় কন্যা রিপার সাথে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হয় সরাইলের চাকশার গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে দিনাছের। বিয়ের সময় দিনাছকে যৌতুক বাবদ স্বর্ণালঙ্কার সহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল দেওয়া হয়। বিয়ের পর থেকেই রিপার স্বামী শ্বশুড় ও দেবর সহ পরিবারের লোকজন নগদ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। দিনে রাতে সুযোগ পেলেই রিপাকে মারপিট করে আসছে। তাদের শাররিক ও মানসিক নির্যাতনে রিপা দিশেহারা। তিনটি সন্তানের কথা চিন্তা করে রিপা স্বামীর বর্বর নির্যাতন সহ্য করে আসছে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে রিপার বাবা মাঝে মধ্যে সাধ্যমত দিনাছকে নগদ টাকা দিয়ে আসছে। সম্প্রতি ১ লাখ টাকার জন্য রিপাকে মারধর করতে থাকে স্বামী ও তার স্বজনরা। অপারগতা প্রকাশ করায় রিপার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। গত বুধবার রাতে রিপার বাবার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা এনে দিতে চাপ দেয়। রাজি না হওয়ায় রিপাকে লাঠি দিয়ে উপুর্যুপরি আঘাত করতে থাকে স্বামী দিনাছ। রিপাকে পিটিয়ে আহত করে বসত ঘরে তালাবদ্ধ করে চলে যায় স্বামী। গতকাল দুপুরে গৃহবধুকে নির্যাতনের পর তালাবদ্ধ করে রাখার খবরে স্থানীয় লোকজন ওই বাড়িতে যেতে চাইলে বাঁধা দেয় দিনাছের ভাই সেলিম মিয়া (৩০)। সেলিম সাংবাদিক সহ লোকজনকে প্রাননাশের হুমকি দেয়। এক বিশেষ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে সেলিম বলে পুলিশ ও ৪-৫টি মামলা আমার জন্য কিছুই না। দুপুরে সরাইল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মোঃ মজিবুর রহমান ও উপ-পরিদর্শক মো: মহিউদ্দিন দিনাছের বসত ঘর থেকে আহত অবস্থায় রিপাকে উদ্ধার করে। দুপুর ২টায় রিপার লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় যান। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (তদন্ত) দেখা মিলে বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। বাদীর লোকজন এক হাজার টাকা বের করে দিলে ১ হাজার টাকায় কোন মামলা এফ আই আর হয় না বলে সাফ জানিয়ে দেয় পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত এ মামলা নথিভুক্ত হয়নি। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মোঃ আবদুল হক টাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ব্যস্ত ছিলাম। এ কথা বলেই লাইন কেটে দেন।