Main Menu

সরাইলে জ্যুক আতঙ্কে কৃষক; পাকা ধান ঝরছে জমিতেই

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল :: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলে জ্যুক আতঙ্কে ভুগছে কয়েক হাজার কৃষক ও গৃহস্থ্য। ফসলি জমিতে কিলবিল করছে জ্যুক। মিনিটে সেকেন্ডে আক্রমন করছে ধান কাটার শ্রমিকদের পায়ে। জ্যুকের কামড়ের ভয়ে ভরা মৌসুমে তারা কাটতে পারছে না এলাকার কৃষকরা (ইরি ধান)। চড়া মূল্য দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না শ্রমিক। ফলে ধান পেকে ঝরে পড়ছে জমিতেই। ইরি বোরোর বাম্পার ফলনের স্বাদ ছিটকে যাচ্ছে তাদের। চরম ক্ষতির শঙ্কায় ভুগছে উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের কৃষকরা।

বুধবার সকালে সরজমিনে দেখা যায়, দেওড়া, শাহজাদাপুর , মলাইশ, নিয়ামতপুর ও ধাউরিয়া গ্রামের হাওর গুলোতে হাজার হাজার একর জমির ইরি ধান পেকে জমিতে পড়ে যাচ্ছে। জ্যুকের ভয়ে ধান কাটতে পারছে না কৃষকরা। কৃষক আবদুর রশিদ, মিন্টু মিয়া, দুলাল মিয়া, চন্দু মিয়া ও লালু মিয়া জানায়, এবার ইরিধানের জমি গুলোতে হাজার হাজার জ্যুক কিলবিল করছে। কোমর পানি থেকে শুরু করে ছিপছিপে পানির জমিতেও জ্যুকের কোন কমতি নেই। শ্রমিকরা ধান কাটতে নামলেই দুই পায়ে আক্রমন করে বসে জ্যুক। পা বেয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ও কামড় দিয়ে থাকে।

এদিকে কৃষি অফিসের দেওয়া লবন চুনের স্থানীয় প্রযুক্তিও খুব একটা কাজে আসছে না। ভয়ে এখন ধান কাটতে আসছে না শ্রমিকরা। অধিক মূল্য দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। সময় চলে যাচ্ছে। জমির ধান গুলো পেকে শুকিয়ে মাটিতে ঝরে পড়ছে। বাধ্য হয়ে কিছু জমির মালিক ফুল প্যান্ট পড়ে দুই পা পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে ধান কাটতে দেখা গেছে। যে জমিতে পানি একটু বেশী সেখানে নৌকা দিয়ে অতি কষ্টে ধান কাটছে কৃষকরা। হঠাৎ করে ফসলি জমিতে জ্যুকের প্রভাবের কারন হিসেবে মাঠের সরকারি খাল গুলো ভরাটকেই দায়ী করছেন কৃষকরা। এর ফলে বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিস্কাশন। এ সময় খালের পানিতেই থাকতো জ্যুক। জমিতে আসতো না। গৃহস্থ্য মাজহারুল হক খান ও রমুজ উদ্দিন বলেন, চড়া মূল্যে সার তেল কিটনাশক ও ছারা (ঝালা) সংগ্রহ করে জমি চাষ করেছি। যে ধান পাওয়ার আশা করেছিলাম তাতে খরচই উঠবে না। এখন তো দেখছি মরার উপর খাড়ার ঘা। ধান কেটে বাড়িতে আনতে পারব না। গত বছরও ৪’শ টাকা রোজে শ্রমিক খাটিয়েছি। এবার তো ৮’শ টাকা দিয়েও লোক পাওয়া যাচ্ছে না। ধান জমিতে পড়েই শেষ হয়ে যাবে। শাহজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, জ্যুক আক্রমনের ঘটনা অতীতের অনেক ইতিহাসকে চাপা দিয়েছে। দুপের খাল সহ মাঠের সকল খাল নালা ভরাট করার কারনে জ্যুক জমিতে এসেছে। আর এখন আমার কৃষকরা দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।

সরাইল  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, বিষয়টি জেনে জমিতে কিছু লবন ও চুন ছিটিয়ে দিতে বলেছি। পায়ে পলিথিন মুড়িয়ে নেয়া অধিক কার্যকর।






Shares