কসবায় ছুরিকাঘাতে প্রবাসীকে হত্যা ॥ দুইজন গ্রেপ্তার
![+](http://brahmanbaria24.com/wp-content/plugins/zoom-widget/elements/images/1/plus.png)
![100%](http://brahmanbaria24.com/wp-content/plugins/zoom-widget/elements/images/1/100.png)
![-](http://brahmanbaria24.com/wp-content/plugins/zoom-widget/elements/images/1/minus.png)
রুবেল আহমেদ : কসবায় রাতের আধারে ছুরিকাঘাত করে হারুনুর রশিদ (৫০) নামের এক প্রবাসীকে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের খাদলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। জমিতে ফুটবল পড়ে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তর্কের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে মিমাংসা সভায় যাওয়ার পথে তাকে উপুর্যপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানায় পরিবার। নিহত হারুনুর রশিদ উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের খাদলা গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের ছেলে। দীর্ঘদিন কাতারে থেকে দুই বছর আগে একেবারে দেশে ফিরে আসেন। পরিবারের কথা ভেবে তিনি আবার মালয়েশিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আগামী ৫ মে তাঁর মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে নিহতের স্ত্রী লাকি আক্তার বাদী হয়ে ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাগর মিয়াকে প্রধান আসামী করে সাতজনের নামসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনের নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় ফিরোজ মিয়া ও তার স্ত্রী রত্না আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত এলাকায় ভাল মানুষ হিসাবে পরিচিত হারুনুর রশিদ খুনের ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতের চাচা আবদুল মান্নান জানান, হারুনুর রশিদের বাড়ির পাশেই একটি জমিতে তিলের চাষ করেছেন। চারদিকে জাল দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছেন। মহল্লার রহমান মিয়ার ছেলে বায়েজিদ ও ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাগর মিয়াসহ কয়েকজন গত বৃহস্পতিবার বিকালে পাশেই একটি জমিতে ফুটবল খেলছিলো। ফুটবলটি বার বার তিলের জমিতে পড়লে ফসলের ক্ষতির হওয়ায় হারুনুর রশিদ তাদেরকে বকা দিলে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বায়েজিদের দাদা আনু মিয়া বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য হারুনুর রশিদকে খবর দেয়। আনু মিয়ার বাড়িতে হারুনুর রশিদ যাওয়ার পথে উৎ পেতে থাকা বায়েজিদ ও সাগর মিয়াসহ কয়েকজন মিলে হারুনুর রশিদকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। হারুনুর রশিদের চিৎকারে বাড়ির ও আশে-পাশের লোকজন দৌড়ে এসে হারুনুর রশিদকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
নিহতের ছোট ভাই মো. জিলানী মিয়া বলেন, আমার ভাই একজন সহজ সরল মানুষ। সে দীর্ঘদিন কাতারে ছিলো। দুই বছর আগে কাতার থেকে একবারে চলে এসে নিজের জমিতে কৃষিকাজ করতো। পরিবারের কথা চিন্তা করে আবারও মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহন করেছিলো। আগামী ৫ মে তার মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিলো। কথা কাটাকাটির জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে মিমাংসার জন্য যাওয়ার পথে বায়েজিদ ও সাগরসহ কযেকজন মিলে তাকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে করে মেরে ফেলেছে। আমার ভাই খুনিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছি। খুনিরা এবং তাদের আত্মীয় স্বজনরা এখনো হুমকি দিচ্ছে।
বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, হারুনুর রশিদ এলাকায় একজন ভাল মানুষ হিসাবে পরিচিত। জমিতে ফুটবল পড়ায় একটু তর্কাতর্কির কারনে সাগর ও বায়েজিদরা ছুরিকাঘাত করে একটি সুস্থ মানুষকে খুন করবে এটা ভাবাও যায়না। মানুষ এমন নৃসংশ কেমন করে হয়।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহমেদ বলেন, জমিতে ফুটবল পড়ে ফসল নষ্ট হওয়ায় কথা কাটাকাটি নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামীরা উপর্যপুরি ছুরিকাঘাতে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী লাকি আক্তার বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। নিহতের শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এজহার ভুক্ত আসামী মো. ফিরোজ মিয়া ও রতœা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।