আখাউড়া থেকে অপহৃত দেড় বছরের শিশু সিফাতকে নোয়াখালীর সুবর্ণচর থেকে উদ্ধার
আখাউড়া উপজেলা থেকে অপহৃত এক শিশুকে অপহরণ হওয়ার দুই দিন পর নোয়াখালীর সুবর্ণচর থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার ধর্মপুর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করেন চরজব্বর থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. ইব্রাহীম খলিল।
উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম সিফাত মোল্লা (২)। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হচ্ছেন- সুবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের চরকাজী মোখলেস গ্রামের নুর নবীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৫) ও একই এলাকার শহীদের ছেলে ফারুক (৩৫)। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, অপহরণকারী ফারুক আখাউড়া পৌরসভার দেব গ্রামে তার স্ত্রী রূপাকে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সেই সুবাদে অপহৃত শিশুটির বাবা শিপন মোল্লা ও তার মায়ের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন ফারুক দম্পতি। গত রোববার দুপুরে সিফাত মোল্লার বাবা কাজে বাড়ির বাহিরে এবং তার মা ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় কৌশলে ফারুক সিফাত মোল্লাকে অপহরণ করে নোয়াখালীর সুবর্ণচর নিয়ে আসেন। এ বিষয়ে আখাউড়া থানায় একটি জিডি করেন শিশুটির পিতা। এরপর ফারুক বিকাশের মাধ্যমে সিফাত মোল্লার বাবার কাছে ৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে তার কাছে বিকাশ নম্বর চাওয়া হয়। ফারুক তার সহযোগী আনোয়ারের বিকাশ নম্বর দেয়। ওই নম্বরে সিফাত মোল্লার বাবা ৫ হাজার টাকা বিকাশে পাঠায়। পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিকাশ নম্বরের স্থান ও ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেন। বিষয়টি নোয়াখালীর সুবর্ণচর থানা পুলিশকে অবহিত করেন আখাউড়া থানা পুলিশ। পরে মঙ্গলবার রাতে চরজব্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক ইব্রাহীম খলিল পুলিশ নিয়ে সুবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের চর কাজী মোখলেস গ্রাম থেকে ফারুক ও আনোয়ারকে এবং সদর উপজেলার ধর্মপুর থেকে অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করে আখাউড়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
পুলিশ রাতেই শিশুটি ও অপহরণকারী ২ ব্যক্তিকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, রাতেই শিশুটিকে তার বাবা মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার সকালে ২ অপহরণকারী ফারুক ও আনোয়ারকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিশু অপহরণকারী দুই ব্যক্তিকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে রিমান্ডে আনতে আদালতে আবেদন করা হবে।
চর জব্বর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইব্রাহীম খলিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরেই অতি অল্প সময়ের মধ্যে দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার ও শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক শিশু অপহরণের কথা স্বীকার করেছে।