হরষপুরের কাজী হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহ রেজিষ্ট্রির অভিযোগ:: তদন্তের নির্দেশ
ডেস্ক ২৪:: হরষপুর ইউনিয়নের নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার (কাজী) হুমায়ুন কবির এলাকার বাল্য বিবাহ রেজিষ্ট্রির করা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন হরষপুর গ্রামে উপস্থিত না থেকে পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ জেলায় বসবাস করার
অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে সুস্পষ্ট মতামত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বিজয়নগর সাব রেজিস্ট্রারকে পত্র দিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিচার শাখা-৭ এর সিনিয়র সহকারী সচিব জিএম নাজমুছ শাহাদাৎ। এছাড়া একই ব্যক্তি (কাজী) হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করার আর্থিক দুর্নীতি বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সি.আর মামলা ও পুলিশ সুপারের নিকট আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে।
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব বরাবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের বুল্লা গ্রামের মোঃ হেলাল উদ্দিন এর দাখিলকৃত অভিযোগে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নে কর্মরত নিকাহ্ ও তালাক রেজিষ্ট্রার (কাজী) হুমায়ুন কবির দীর্ঘদিন যাবত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা থাকা সত্বেও বাংলাদেশ সরকারের নিকাহ্ রেজিষ্ট্রারের বিধি ও নীতি লঙ্ঘণ করে বিপুল অর্থের বিনিময়ে এলাকায় বাল্য বিবাহ রেজিষ্ট্রি করে। সে বিগত ২০১৫ সালের আগষ্ট মাসে হরষপুর ইউনিয়নের কামালপুর নিবাসী মোঃ সেলিম মিয়ার নাবালিকা কন্যা সাবিনা আক্তার (জন্ম তারিখ ১০/০১/২০০১) এবং ডিসেম্বর মাসে বুল্লা হাজী বাড়ি নিবাসী মোঃ নান্নু মিয়ার নাবালিকা কন্যা মোছাম্মৎ জাকিয়া আক্তার (জš§ তারিখঃ ০১/০১/২০০০) সহ শতাধিক বাল্য বিবাহ সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করেছে। সে এলাকার জনগণের সাথে দুর্ব্যবহার এবং স্থানীয় প্রশাসন ও কাজী সমিতির আদেশ উপদেশ উপেক্ষা করে নিয়ম নীতি বহির্ভূত বিভিন্ন ধরণের কার্যকলাপ করে নিকাহ্ রেজিষ্ট্রার (কাজী)দের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে। সে বর্তমানে হবিগঞ্জ জেলায় বসবাস করায় নিকাহ্ (বিয়ে) ও তালাক রেজিষ্ট্রি করার সময় তাকে খুঁজে না পাওয়ায় স্থানীয় জনগণকে অবর্ণনীয় অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য আবেদনটিতে নিকাহ্ ও তালাক রেজিষ্ট্রারের (কাজী) দায়িত্ব হতে হুমায়ুন কবিরকে অব্যাহতি দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
এর ভিত্তিতে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৭ এর সিনিয়র সহকারী সচিব জি এম নাজমুছ শাহাদাৎ গত ০৩/০৫/২০১৬ তারিখে স্বাক্ষরিত বিচার-৭/২ এন-৩৬/২০১২-১৭১ নং পত্রে বিজয়নগর সাব রেজিষ্ট্রারকে সরেজমিন হরষপুর ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিষ্ট্রার হুমায়ুন কবির বাল্য বিবাহ রেজিষ্ট্রি করেন কিনা এবং তিনি হবিগঞ্জ জেলায় বসবাস করেন কিনা তা সরেজমিন তদন্তপূর্বক পত্র প্রাপ্তির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে, এই একই ব্যক্তি হুমায়ুন কবির (কাজী) পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ জেলাধীন মাধবপুরস্থ তার মালিকানাধীন ঝমঝম ব্রিকস সহ কয়েকটি ব্রিকস ফিল্ড এর ইট সরবরাহ এবং ইট পোড়ানোর কয়লা ক্রয় বাবদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বন্ধু অ্যাডঃ মোঃ ইসলাম উদ্দিন দুলাল সহ অন্যান্য বন্ধুদের নিকট হতে স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরিত অঙ্গীকারনামা ও চেকের মাধ্যমে দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করায় প্রতারিত বন্ধুরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৪১৭/৪০৬ ধারায় সি. আর-৬১/১৬ প্রতারণা মোকদ্দমা এবং এন আই এক্ট এর ১৩৮ ধারায় সি. আর ১৬৯/১৬ মোকদ্দমা রুজু করে বিচার প্রার্থী হওয়ার পাশাপাশি পুলিশ সুপার ব্রাহ্মণবাড়িয়া বরাবর গত ১১/০২/২০১৬ তারিখে দাখিলকৃত আবেদনে কাজী হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং উপযুক্ত প্রতিকার প্রার্থনা করেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আদালতে আরও বেশ কয়েকটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।