প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণের কথা বলে শুরু হওয়া মেলায় বসেছে জুয়ার আসর। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় লোকজনের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। তবে মেলা আয়োজক কর্তৃপক্ষ বলছেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা মেলার আয়োজন করেছেন। বিষয়টি সম্পর্কে সবাই অবগত আছেন। অন্যদিকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, জুয়া বৈধ কোনো খেলা নয়। আদালতের কোনো কপি তাঁদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। আয়োজকরা যে কপি দিয়েছে সেটি যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। আদালতের নির্দেশনার বাইরে কোনো খেলা হলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরজমিনে দেখা গেছে, মেলার প্রবেশ পথের কাপড়ের গেইটে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের একটি ব্যানার টানানো। ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে ডান দিকে চোখে পড়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী। প্যান্ডেলের পশ্চিম দিকে তিনটি স্থানে বসানো হয়েছে জুয়ার ঘর। জেলার বিভিন্ন এলাকাসহ আশপাশ জেলা থেকে পেশাদার জুয়ারীসহ লোকজন আসে জুয়া খেলতে। রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে জুয়ারীর সংখ্যা। প্রতিরাতে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয় এখানে। মেলার ভেতর একটি প্যান্ডেলে বসে থাকা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলু মিয়া বলেন, কীভাবে এখানে জুয়া খেলা হচ্ছে তা আমরা জানিনা। আমরা জানি শুধু লটারি আর হাউজি খেলা হবে। কিন্তু এখন এখানে জুয়ার আসর বসায় মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক বদনাম হচ্ছে। মেলার তদারকীকারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী গ্রামের বাসিন্দা ও বিএনপি নেতা রহিম সর্দার বলেন, জুয়ার অনুমতি আছে কি নেই তা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে জেনে নিন। জেলা প্রশাসকের কাছে সকল কাগজপত্র জমা আছে। জুয়া অবৈধ হলে প্রশাসন অবশ্যই জুয়া বন্ধ করে দিত। এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, মেলার নামে এখানে জুয়ার আসর বসানো হয়েছে। আদালতের আদেশের কথা বলে চলছে জুয়া খেলা। বিষয়টি নিয়ে এখন আমরা আইনগতভাবে এগুচ্ছি। আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আনিসুর রহমান ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আমরা পেরে উঠছিনা। জুয়া বন্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। জেলা প্রশাসক নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, মেলার কোনো অনুমতি আমার কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। তবে আদালতে নির্দেশনার একটি কপি আমার কাছে দেওয়া হয়েছে। সেখানে হাউজি সহ কয়েকটি খেলার কথা বলা আছে। এর বাইরে কোনো খেলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে জুয়া আইনগত বৈধ কোনো খেলা নয়।
|