ঈভটিজিং :: নাসিরনগরে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
মোঃ আব্দুল হান্নান, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বখাটের উত্ত্যক্ত সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের ভলাকুট কে,বি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ডালিয়া আক্তার (১২)। রবিবার বিকালে ডালিয়া তার নিজ ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে সোমবার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় পুলিশ ফঁড়ির সদস্যরা নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেন
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ডালিয়ার মা পারুল বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে ডালিয়া আক্তার যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তো, তখন থেকেই এলাকার বখাটে হামিদ মিয়া তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করতো। এ নিয়ে স্থানীয় মেম্বর মো. শামসু মিয়ার উপস্থিতিতে একাধিক সালিশ-দরবার হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। বখাটেরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা আইনের আশ্রয় পায়নি। তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে ডালিয়া আক্তার ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর তাকে উত্ত্যক্ত করার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় বখাটে হামিদ। এ অবস্থায় আমার স্বামী মো. খেলু মিয়া সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে ঢাকায় বড় ছেলের বাড়িতে অনেকদিন রেখে আসে। পরে পরীক্ষার জন্য আবার বাড়িতে নিয়ে আসে। কিন্তু অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। সম্প্রতি, স্কুলে যাওয়ার পথে বখাটে হামিদ ডালিয়াকে কু-প্রস্তাব দেয়। এ সময় ক্ষুব্ধ ভাষায় ডালিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে। এরই এক পর্যায়ে সে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।
এ ব্যপারে ডালিয়ার সহপাঠী শিমু আক্তার,জেসমিন, রিপা দাস বলেন, বখাটে হামিদের উত্ত্যক্ত সহ্য করতে না পেরেই ডালিয়া আত্মহত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
ভলাকুট কে,বি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন, ডালিয়ার সহপাঠিদের মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছি। তবে হামিদের উত্ত্যক্ত করার কথা তার পরিবার থেকে কখনো আমাকে জানানো হয়নি। এই রকম মৃত্যু কারো কম্য নয়। ঘটনার সঠিক তদন্ত্য করে ডালিয়ার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
অন্যপক্ষের দাবী মেয়ের অভিভাবক মেয়েটিকে প্রতিবেশী অন্য এক যুবকের সাথে বিয়ে দিতে চাইলে মেয়েটি রাজি না হওয়ায় তার পিতা তাকে মারপিট করে। অভিমানে মেয়েটি অত্মহত্যা করে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদির বলেন, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি আমি শুনেছি। প্রাথমিকভাবে প্রেমঘটিত কারণ বলেই মনে হচেছ। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত করে বিস্তারিত জানতে নাসিরনগর থানার এক উপ-পরিদর্শককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রির্পোট হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।