Main Menu

নাসিরনগর এখন ইয়াবার স্বর্গরাজ্য

+100%-

এম.ডি.মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর হতেঃ নাসিরনগর উপজেলায় এখন হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবা। উপজেলার সর্বত্র এখন মরণনেশা ইয়াবার ছোবল। কেউ এটাকে ‘বাবা’ বলেন আবার কেউ ইয়াবা। সর্বনাশ হচ্ছে নাসিরনগর তথা দেশের কিশোর ও যুব সমাজের । সেক্স ট্যাবলেট খ্যাত ইয়াবা সহজলভ্য হওয়ায় স্কুল কলেজের ছেলেরা এর প্রতি বেশি ঝুঁকছে । ফলে এলাকায় ভাসমান পতিতার উপদ্রবও বেড়েছে । বিশেষ করে সন্ধ্যার পর নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ,আনন্দপুর চৌরাস্তার মোড়,নাসিরনগর কলেজ মোড়ের পাশে বসে সন্ধ্যাকালীন সময়ে পতিতা ও খদ্দেরদের আনাগোনা। এসব বন্ধে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। এমনকি সামাজিকভাবেও কোনো আন্দোলন গড়ে ওঠছে না । ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে মাদকের ব্যাপকতা । আর এর সর্বনাশা ছোবলে ধ্বংশ হচ্ছে এলাকার কিশোর ও যুব সমাজ ।নাসিরনগরের বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী,নাসিরনগর ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক, মরণ নেশা ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ২০ মার্চ রাত ৯টায় সিলেট র‌্যাবের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক গ্রামের জাকারিয়া(৪২) বাবা জাকিরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৭৫০ পিস ইয়াবা,নগদ ৩ লক্ষ টাকা,৩টি সিসি ক্যামেরা সহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে। গত ২২ মার্চ রাতে এসআই আল ইমরান বাদী হয়ে নাসিরনগর থানায় ১৯(১) এর ৯(খ)/৩(ক)/২১.১৯৯০ সালের ধারা মোতাবেক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের বলে একটি মামলা করেন। তবে বাবা জাকিরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি র‌্যাব। বর্তমানে সে পলাতক।
গত দু’বছরে নাসিরনগরে ইয়াবার কোন ক্রেতা ও বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করতে দেখা যায়নি নাসিরনগরে। তবে পাশ্ববর্তী সিলেট হতে আইন শৃংখলা বাহিনী এসে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। অথচ নাসিরনগর পুলিশ প্রসাশন তাদের নামই জানেন না। জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে এসব গডফাদাররা। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, গ্রাম, মহল্লা, হাট-বাজার ঘুরে ইয়াবা বিস্তারের ভয়াবহতার চিত্র পাওয়া গেছে। আগে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ইয়াবা বেচাকেনা হলেও এখন তা আর নির্দিষ্ট কোনো স্থানে নেই। ‘কল অন ডেলিভারি’তে ইয়াবা মিলছে নাসিরনগরের সর্বত্র। ৫০০ টাকা করে বিক্রি হয়।
নাম প্রকাশে একজন ইয়াবা সেবনকারীরা বলেন, আমি ইয়াবার ছোবলে পড়ে পরিবারের মান-সম্মান সব হারিয়েছি। নাসিরনগরের অনেক যুবক ছেলে এখন মরণ নেশা ইয়াবা নেশায় আসক্ত। আগে উপজেলার নির্দিষ্ট স্থানে ইয়াবার বেচাকেনা ও সেবন হতো। এখন আর নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। হাত বাড়ালেই এখন ইয়াবা মেলে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই চলে ইয়াবার কেনাবেচা। বিক্রেতাদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে স্থানের কথা বললেই পৌঁছে দেওয়া হয় মরণনেশা ইয়াবা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাসিরনগর থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নাসিরনগরে ইয়াবার যে ছড়াছড়ি তা পুলিশ কোনদিনও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেনা। কারণ পুলিশ আসামী ধরে আর বড় বড় নেতারা ৫ মিনিটের মধ্যেই আসামী ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। ইয়াবা ব্যবসায় নাসিরনগর ভরে গেছে। ইয়াবার সবচেয়ে বেশি কেনা-বেচা হয় ধরমন্ডলে। তার পরের স্থানই আছে গুনিয়াউক ইউনিয়ন, ফান্দাউক,বুড়িশ্বর,নাসিরনগর সদর,চাতলপাড়,গোকর্ণ,ভলাকুট,হরিপুর ইউনিয়ন। গুনিয়াউক ইউনিয়নে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে স্হানীয় জন প্রতিনিধি সহ রাজনৈতিক নেতাদের আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বুড়িশ্বর ইউনিয়নের একজন বলেন, লক্ষীপুর গ্রামের বক্কর সোনারগাট গিয়ে তার শশুরবাড়িতে দু’দিন থাকে। শশুরবাড়িতে থাকা অবস্থায় সেখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইয়াবা কিনে সিএনজি দিয়ে লক্ষীপুর আসে। যদি রাত হয়ে যায় তবে লক্ষীপর বাজারের জনৈক ঔষধ ব্যবসায়ীর ঘরে ইয়াবা রাখা হয়। প্রতি চালানে তারা দু’লক্ষ টাকার ইয়াবা নিয়ে আসে। প্রতি মাসে ৪টি চালান আসে লক্ষীপুরে।  বুড়িশ্বর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের জনৈক জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে  নাসিরনগর উপজেলার কিছু অংশ নিয়ন্ত্রিত হয়। এদের যাতায়তের জন্য  সিএনজি ব্যবহার করা হয়।

প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বেণীপাড়া মামুন ব্রিক ফিল্ডের কাছে পাশে বসে ইয়াবা বিক্রির হাট। আশুরাইল গ্রামের ফকিরের ছেলে কালন সহ শাহালম ,সুরুজ মিয়া হবিগঞ্জ হতে ইয়াবা নিয়ে আসে। মামুন ব্রিক ফিল্ডের মালিক মোঃ সফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন অনেক ইয়াবা সেবনকারী তার ব্রিক ফিল্ডের খালি জায়গা দখল করে ইয়াবা সেবন করে। মালিক পক্ষ বাধাদিলে তাদের উপর শুরু হয় অত্যাচার নির্যাতন। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খোলে কথা বলার সাহস পায়না ।
ভূবন আব্দুল্লাহ হুজুরের মাজারকে ঘিরে পূর্বভাগ ইউনিয়নের চান্দের পাড়া গ্রামের উজ্জল মিয়া ইয়াবার রমরমা ব্যবসা করছে। উজ্জল মিয়া মাধবপুর হতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা নিয়ে আসছে পূর্বভাগে। তার পর মাজারে আসা বিভিন্ন যুবকদের কাছে ৫০০ টাকা করে প্রতি পিস ইয়াবা বিক্রি করছে।সন্ধ্যার পর মাজার প্রাঙ্গন হয়ে উঠে ইয়াবার জংশন।
ধরমন্ডলে জনৈক রাজনৈতিক নেতার  নির্দেশে চলে ইয়াবার সিন্ডিকেট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধরমন্ডলের একজন ইউপি সদস্য বলেন, ধরমন্ডলের অনেক স্হানীয় জনপ্রতিনিধিই মূলত ইয়াবার মূল হোতা। রমজান মেম্বারের ছেলে রশিদ মিয়া। বর্তমানে সে ইয়াবা সহ গ্রেপ্তার হওয়ায় জেলে আছে। ৭নং ওয়ার্ডের রুক্কু চোরের ৮ জন মেয়ে মাদক ব্যবসায় জড়িত। দৌলতপুর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের গাজু মিয়া। জানা যায় গাজু মিয়া চিটাগাং হতে ইয়াবার বিশাল চালান মাধবপুর,হবিগজ্ঞ,লাখাই সহ আশপাশের এলাকায় পাইকারী বিক্রি করে।
ফান্দাউক ইউনিয়নের ইয়াবা ব্যবসা মূলত নিয়ন্ত্রণ করে জনৈক জনপ্রতিনিধি। তার নির্দেশে বাবা জাকির সমগ্র উপজেলায় ইয়াবার একচেটিয়া ব্যবসা করে যাচ্ছে। কিছুদিন পূর্বেও বাবা জাকির বিএনপির রাজনীতি করত। হঠাৎ করেই সে স্হানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ফান্দাউক ইউনিয়নরে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরীরা ইয়াবা ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত। কিছুদিন আগেও ফান্দাউক দক্ষিণ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী পলাশ মিয়া ইয়াবার বিশাল চালান নিয়ে গেয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে। তার পর দু’মাস জেলখেটে বের হয়।

ইয়াবার মরণ ছোবলে আক্রান্ত নাসিরনগরের যুব সমাজ। অন্যান্য মাদকের চেয়ে ইয়াবা বহনে সহজ হওয়ায় দ্রুততার সাথে তা ছড়িয়ে পড়ছে উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। নাসিরনগর উপজেলায় মাদকের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে সিলেট জেলা পুলিশ ও র‌্যাবের মাদক বিরোধী অভিযানে বিপুল ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায়। তবে স্থানীয়রা বলছে, উদ্ধারের চেয়ে কয়েক গুণ বেশী ইয়াবা ট্যাবলেট ছড়িয়ে পড়ছে হাওর বেষ্টীত এ জনপদে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় নাসিরনগর উপজেলায় সব ধরনের মাদক দ্রব্য হাতের নাগলেই পাওয়া যাচ্ছে। টাকা দিলেই মিলছে মাদক। হাত বাড়ালেই পওয়া যায় ফেনসিডিল,গাঁজা,বাংলা মদ ও ইয়াবার মতো মাদক। বেশ কয়েকজন ব্যক্তি নিয়ন্ত্রণ করছে এ সর্বনাশা মাদকের ব্যবসা। নাসিরনগর পুলিশ প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগে এসব ব্যক্তিরা এলাকায় মাদকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব মাদক দামে সস্তা হওয়ায় এর নেশার ফাঁদে পা দিয়ে ধ্বংস হচ্ছে এলাকার কিশোর ও যুব সমাজ। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২০০শতটি স্পটে বেচাকেনা চলছে এসব মাদক।
মাদকের স্পট হলঃ
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসার পেছনে,নাসিরনগর ডিগ্রী কলেজ চত্বর, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রবেশ চত্বর, নাসিরনগর আধুনিক হাসপাতালের বট গাছের নীচে,নাসিরনগরে পরিত্যক্ত সিনেমা হল,নাসিরনগর কলেজ মোড়,আশুতোষ পাইলট খেলার মাঠ চত্বর, নাসিরনগর পশ্চিমপাড়া,নাসিরনগর কৃষি অফিসরে পরিত্যক্ত বীজাগার চত্বর,দাতঁমন্ডল মোড় বাজার। বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তুল্লাপাড়া মন্দিরের মাঠ,বুড়িশ্বর বাজার,আশুরাইল,বেনীপাড়া ইট ভাটার প্রবেশ চত্বর,লক্ষীপুর বাজার, লক্ষীপুর শেখ রাসেল স্টেডিয়াম চত্বর।
ফান্দাউক গরুর বাজার,ফান্দাউক ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর,ফান্দাউক ঋষি পাড়া,ফান্দাউক প্রাথমিক বিদ্যালয়,ফান্দাউক গুচ্ছগ্রাম, ফান্দাউক-লাখাই সংযোগ সড়ক, ছাতিয়াইন বাজার ও তার আশ-পাশের বিভিন্ন সংযোগ সড়ক। গুনিয়াউক বাজার,গুনিয়াউক হাসপাতাল মোড়,পূর্বভাগ মোড় বাজার,পূর্বভাগ এইচডিপি হাই স্কুল মাঠ চত্বর,ভূবন আব্দুল্লাহ হুজুরের মাজার প্রাঙ্গন,পূর্বভাগ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠ চত্বর চান্দের পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোকর্ণ হাইস্কুল প্রাঙ্গন,চৈয়াড়কুড়ি বাজার,চৈয়াড়কুড়ি চেম্পু স্ট্যান্ড, গোকর্ণ বেড়ি বাধঁ,জেঠাগ্রাম মাফারা ব্রীজ,নূরপুর মোড় বাজার, ভলাকুট হাইস্কুল,ভলাকুট বাজার,ভলাকুট নৌকা ঘাট,গোয়ালনগর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র,গোয়ালনগর নৌকা ঘাট, চাতলপাড় বড় বাজার,চাতলপাড় চকবাজার,চাতলপাড় কলেজ মাঠ,চাতলপাড় জেটি ঘাট, হরিপুর রাজ বাড়ি,হরিপুর সিএনজি স্ট্যান্ড সহ এমন আরো শত শত স্পট আছে ইয়াবা বিক্রি ও সেবনের স্থান।
এসব স্পটে অবাধে চলছে সর্বপ্রকার মাদক বেচাকেনা ও সেবন। খুচরা বিক্রেতাদের হাতঘুরে এসব স্পট থেকেই চলে যাচ্ছে সেবনকারীদের হাতে। এছাড়া মোটরসাইকেল যোগে ভ্রাম্যমান মাদক বিক্রেতার একটি দল পুরো উপজেলা চষে বেড়াচ্ছে।
এসব মাদক দ্রব্যের বেশির ভাগ ক্রেতা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ও গ্রামের বেকার যুব সমাজ। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, মাদকের বড় চালান উপজেলায় ঢুকছে লাখাই হয়ে ফান্দাউক। মাধবপুর উপজেলার রতনপুরের আলআমিন হোটেল হয়ে নাসিরনগর সদরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ইউনিয়নে পাচার করা হয়।
এছাড়াও চাড়লপাড়,গোয়ালনগর ও ভলাকুটের মত হাওয়র বেষ্টীত নদী পথে রয়েছে ইয়াবার প্রায় শতাদিক স্পট যা পুলিশ ইচ্ছে করলেই এত অল্প সংখক বাহিনী দিয়ে নিয়ন্ত্রন করতে পারবেনা বলে মত দেন ভাটি এলাাকার কিছু সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, পর্দার অন্তরালে দুই মাদক সম্রাট। গত দু’মাস পূর্বে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের এক মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশ ইয়াবা সহ গ্রেপ্তার করলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে মোটা অংকের টাকার বিমিয়ে ওই মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড়িয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের স্থানীরা। এতে লাভবান হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী সহ ব্যবসায় জড়িতরা।,
এ ব্যপারে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, নাসিরনগরে এত মাদক আছে আমরা জানতাম না। ফান্দাউকের ইয়াবা আটকের বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।






Shares