Main Menu

বাংলাদেশ ইসকন কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দ ও সুলতানা কামাল নাসিরনগর পরিদর্শন

‘এ পরিস্থিতিতে হিন্দুদের বাংলাদেশ ত্যাগ বাড়তে পারে’

+100%-

skনিউজ ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় হিন্দুদের দেশত্যাগ বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করেন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল৷ নাসিরনগরে হামলার শিকার পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাতের পর এ কথা বলেন তিনি৷

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গিয়ে হামলার শিকার হিন্দু পরিবারগুলোর অবস্থা দেখেছেন মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল৷ ডয়চে ভেলেকে টেলিফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে অনেকটা প্রশাসন এবং রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণেই হামলা চালানো হয়েছে৷

সুলতানা কামাল বলেন, ‘‘জেলা ও পুলিশ প্রশাসন হেফাজত এবং আহলে হাদিসকে প্রতিবাদ সভার অনুমতি কিভাবে দিল সেটাই বড় প্রশ্ন৷ এমনকি হামলার সময় কিছু পুলিশ সদস্য সেখানে থাকলেও অজ্ঞাত টেলিফোন পেয়ে তারা চলে যায়৷ আমরা হামলার শিকার কয়েকটি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি৷ তারা প্রাণ ভয়ে বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন৷ এখন ফিরে এসেছেন৷তিনি  বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ”রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে আক্রান্ত সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কথা বলে এবং এলাকা ঘুরে মনে হয়, একাত্তরে যে ভয়াবহ নির্যাতন হয়েছিল হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর এ যেন তারই আরেক রূপ। প্রচণ্ড হিংসা ও হেনস্তা করার মনোভাব নিয়ে মন্দির ভাঙা হয়েছে।  আমার পরিচিত অনেক হিন্দু পরিবারই দেশ ত্যাগ করেছে৷ অনেক শহর ফাঁকা হয়ে গেছে৷ তারা প্রধানত নিরাপত্তার কারণেই বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন৷ আর এবারের ঘটনার পর আরো যদি কোনো পরিবার দেশ ছেড়ে চলে যায় তাহলে তাদেরতো দোষ দেয়া যাবে না৷”

kbএসময় সুলতানা কামালের সঙ্গে ছিলেন ‘নিজেরাই করি’ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক খুশি কবীর, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য্যসহ আরও অনেকে। খুশি কবীর বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ দেশে সবার সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।’
ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘নাসিরনগরের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত।’ তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার দলের ভেতরে, দলের বাইরে, প্রশাসনের ভেতরে শর্ষের মধ্যে ভূত আছে। সেগুলো বের করুন। শুদ্ধি অভিযান করেন। আপনার বাবা বলেছিলেন, আমার জীবনে বড় ভুল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বানাতে গিয়েছিলাম পাকিস্তানের প্রশাসন দিয়ে। তেমনি আপনার হাতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশাসন নেই। আপনার হাতের শর্ষের মধ্যে ভূত আছে।’

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সভাপতি কাজল দেবনাথও বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখনো আতঙ্ক কাটেনি৷ পরিকল্পিত এই হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ বছরের পর বছর ধরে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামরা ও নির্যাতন হচ্ছে, এটা তারই ধারাবাহিকতা৷ ‘‘এই ধারাহিক হামলায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাস করছে৷ রামুতে বৌদ্ধমন্দিরে যেভাবে ফেসবুক পোস্টের অজুহাত তুলে হামলা চালানো হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও একইভাবে হামলা হয়৷ ওই এলাকা থেকে দু’জন মন্ত্রী আছেন সরকারে৷ তারা চুপ৷ তাদের একজন ঘটনা আড়াল করার জন্য নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছেন৷ সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চাইলে তাদের ‘মালাউনের বাচ্চা’ বলে গালি দেয়া হচ্ছে৷পরিস্থিতি যা, তাতে হিন্দুদের দেশত্যাগ বাড়তে পারে৷ কিন্তু আমরা কেন দেশ ছাড়বো? আমরা আমাদের জন্মভূমি ছেড়ে কোথায় যাবো? আমরা শুধু প্রতিবাদ নয়, এবার প্রতিরোধ করতে চাই৷”

নাসিরনগরে হামলার প্রত্যক্ষদর্শী এবং সার্বজনীন মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রবিবার ১২শ’র মতো তরুণ লাঠি ও দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়৷ মন্দিরের পুরোহিতের ওপরও হামলা চালানো হয়৷ তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন৷ হামলাকারীরা বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়, প্রতিমা ভাঙে৷”

তিনি বলেন, ‘‘এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে৷ সবাই যার যার বাড়িতে অবস্থান করছেন৷”

 

 






Shares