যুদ্ধাপরাধীদের ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের সাথে সাক্ষাতের কারণে ইউপি সদস্যকে মারধর
মোঃ আব্দুল হান্নান- হবিগঞ্জের মোড়াকড়ি ও কৃষ্ণপুর থেকে ফিরে। হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার মোড়াকড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী ও মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের প্রাক্তন মন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের দ্বারা ৭১ সালে সংগঠিত খুন ধর্ষন লুটের মত অংসখ্য অভিযোগের কারণে গ্রেপ্তার রাজাকার কমান্ডার সাবেক মন্ত্রী নোয়াপাড়ার সৈয়দ মোঃ কায়সার ও তার অপর সহযোগি মোড়াকড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ও লাখাাই উপজেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম নেতা কায়সারের সেকেন্ড ইন কমান্ড মোঃ লিয়াকত আলীর খোঁজে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল শনিবার হবিগঞ্জে আসেন। মানবতা বিরোধী কর্মকান্ডের স্মৃতি চিহ্ন ও সাক্ষ্যপ্রমাণের বাস্তব অবস্থান সরেজমিন পরির্দশনে এবারই প্রথম আসেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এড: রানা দাস গুপ্ত ও ব্যারিষ্টার তুরিন আফরোজ। ২৭ জুন রাতে হবিগঞ্জে পৌঁছে সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসক পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়াও র্যাবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এ এস পি মনোয়ারা বেগম। শুক্রবার সকালে ওই রাজাকার কমান্ডারের নেতৃত্বে গঠিত কায়সার বাহিনীর আরো অপকর্মের সন্ধানে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার নিভৃতপল্লী গনহত্যাস্থল কৃষ্ণপুরে চুটে যান। এ সময় তাদের সাথে দুই প্রসিকিউটর ছাড়াও ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ৭১এর ঘাতক দালাল নিমূর্ূূল কমিটির সভাপতি এড: মোহাম্মদ আলী পাঠান, সাধরণ সম্পাদক ও জাতীয় কমিটির সদস্য সাংবাদিক রফিকুল হাসান চৌধুরী (তুরিন) তদন্তকারীদল কৃষ্ণপুর গ্রামের কমলাময়ী হাই স্কুলে পৌছার সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য জনতা উপস্থিত হয়ে তাদের ঘিরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময়ে তারা বলতে থাকে শুধু কায়সার নয় এই এলাকার এক রাজাকারের বিচার করতে হবে। আমাদের যা হোক হবে, তবু রাজাকারের বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দেব। ভূক্তভোগীদের মাঝে অনেকেই ছিলেন বয়সের বাড়ে প্রবীন। এ সময় কায়সার বাহিনীর গুলির ক্ষতচিহ্ন ৭১ এর কৃষ্ণপুর এলাকায় নারকীয় ও বিভীষিকাময় হত্যাকান্ডের বর্ণনা তুলে ধরলে এক হৃদয় বিধারক দৃশের অবতারনা ঘটে। সেই সাথে বেড়িয়ে আসে কায়সারের সেকেন্ড ইন কমান্ড মোড়াকড়ি ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে হত্যাযজ্ঞ চালানোর এক লোমহর্ষক কাহিনী। যা শুনে তদন্তকারী সংশ্লিষ্টদের গাশিউরে উঠে। এ ভাবে কায়সারও লিয়াকতের বিরুদ্ধে সরেজমিন তদন্ত ও স্বাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ঘটনাস্থলের স্ক্রেচম্যাপ তৈরী করে মোড়াকড়ি বাসষ্টেশনে গিয়ে ইউপি সদস্য মোঃ তাউজ মিয়ার সাথে দেখা হয় তদন্তকারী দলের। ইউপি সদস্য তাউজ মিয়া জানান এ সময় তদন্তকারী দল গিয়াস উদ্দিন ও আহম্মদলী চেয়ারম্যানকে কোথায় পাওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি জানান সম্ভবত বাজারে। এ কথা বলে ইউপি সদস্য চলে যান। সন্ধা সাড়ে সাত ঘটিকায় চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর ভাই মোজাহিদের নেতৃত্বে কাউছার মিয়া, বসির মিয়া ও জুয়েল মিয়া মিলে ইউপি সদস্য তাউজ মিয়াকে তদন্তকারী দলের সদস্যদের সাথে কথা বলার অপরাধে বেধম মারপিট করে। পরদিন ইউপি সদস্য বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে লাখাই থানা মামলা রুজু করে। এস আই সিরাজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ইউপি সদস্য তাউজ মিয়া জানান, মামলার পর থেকে তাকে বাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না আসামী পক্ষ। উল্টো তার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে। আসামীদের ভয়ে সে এখন গ্রাম ছাড়া। এ বিষয়ে এস আই সিরাজ জানান, ইউপি সদস্যের মামলার তদন্ত করেছি তাদের সাথে পূর্বের শত্র“তা আছে হাতাহাতি হয়েছে সত্য কিন্তু এই ঘটনার সাথে কোন সর্ম্পক নেই। এ বিষয়ে লাখাই থানার ওসির সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে ওসি তদন্ত ফোন রিসিভ করে জানান, ওসি সাহেব ঢাকা গেছেন, ফিরতে ২/৩দিন সময় হবে এবং এ ঘটনা সর্ম্পকে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। |