মসজিদে আজান ও নামাজ বন্ধ, মাদ্রাসা নির্মাণেও বাধা! অভিযোগের তীরে বিদ্ধ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী



ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে মসজিদটির বিদ্যুৎ সংযোগ। গত কয়েক দিন ধরে মসজিদে নামাজ পড়াও বন্ধ রয়েছে। এমনকি নির্মাণাধীন মাদ্রসার কাজও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর এসব কাজের অভিযোগের তীর বিধছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হকের উপরে। এ ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার কওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।
জানা গেছে, জেলার নাসিরনগর উপজেলার ধনকুড়া গ্রামে ২০১৪ সালে ২৫ শতক জায়গার উপর শাহজালাল (রহ.) মসজিদ ও কওমি মাদ্রাসা কমপ্লেক্স নির্মান কাজ শুরু হয়। গত রমজান থেকে ওই মাদ্রাসায় তারাবীহসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও জুমার নামাজ চালু হয়। রমজানের পর থেকে একজন হাফেজ ও ১৫জন শিক্ষার্থী নিয়ে হেফজখানা চালু করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশ বিভিন্ন ভাবে মাদ্রাসার নির্মানকাজ বন্ধ করে দেয়। সর্বশেষ ৬ জানুয়ারী পল্লীবিদ্যুত থেকে লোকজন গিয়ে মসজিদের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এরপর থেকেই মূলত মসজিদের আজান ও নামাজ পড়া বন্ধ রয়েছে।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মাজহারুল হক কাশেমি বলেন, পুলিশ ও পল্লী বিদ্যুতের লোকজনের কাছে কারণ জানতে চাইলে তারা মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশ রয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। কি কারনে মন্ত্রী মসজিদের কার্যক্রম ও মাদ্রাসার নির্মান কাজ বন্ধ করছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে মাওলানা কাশেমি বলেন, স্থানীয় কিছু সুন্নী পন্থী লোক মন্ত্রীর কাছে , এখানে জঙ্গী তৈরী হবে, এখানে হেফাজতের আস্তানা হবে বলে অভিযোগ করেছেন।
এদিকে মসজিদ ও মাদ্রাসা বন্ধের প্রতিবাদে রবিবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের কান্দিপাড়ার জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা থেকে কওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে শত শত মাদ্রাসার ছাত্র শহরের প্রধান প্রধান সড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। পরে প্রেসক্লাব চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
জেলা কওমি ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি মাওলানা ইমরান হোসেনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা কওমি ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতা মাওলানা শুহাইব, মাওলানা তোফায়েল, মাওলানা খালেদ মো. মোশাররফ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী অন্যায়ভাবে নাসিরনগরে কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই আমরা অবিলম্বে বন্ধ করে দেয়া কওমি মাদ্রাসা খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি, পাশাপাশি সরকারের মন্ত্রীসভা থেকে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রীর অপসারণেরও দাবি জানাচ্ছি। যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাদ্রাসা দুটি খুলে দেয়া না হয় তাহলে আগামীকাল আবারও বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে হরতাল-অবরোধসহ নানা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, গত ৬ জানুয়ারী থেকে মসজিদের বিদ্যুৎ বন্ধ। এতে পুলিশের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমরা ১২ জানুয়ারী এ বিষয়টি সমাধানে আলোচনায় বসব। আশা করছি একটি সুন্দর সমাধান করা সম্ভব হবে।
এদিকে, এ অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হক, পিএস মো: মোস্তাফিজুর রহমান, এপিএস মিজানুর রহমানের মুঠোফোন, সরকারি টেলিফোন অফিস ও বাসার নম্বরে কয়েকবার ফোন করলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।