নাসিরনগরে নবান্নের উৎসব আমেজ, আমন ধানের বাম্পার ফলন।
এম.ডি.মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর প্রতিনিধিঃ নতুন ধানের গন্ধে মৌ মৌ করছে গ্রামাঞ্চলের কৃষক কৃষাণীদের বাড়ীর আঙ্গিনা। নতুন ধান ওঠার পরে শুরু হবে নবান্ন উৎসব। বাহারী রকমের পীঠার পসরা সাজিয়ে শীতের সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উৎসবে মেতে উঠবে সবাই। উৎসবের আমেজ থেকে বাদ যাবেনা মেয়ে-জামাইও। মেয়েকে আনতে বাবা যাবেন বিয়াইরে বাড়ি,সাথে আনা হবে জামাইকে।
ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসবের আমেজ। নাসিরনগরে চলছে বোনা ও রোপা আমন ধান কাটার ধুম। উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন বয়সীর কৃষক-কৃষাণীরা কাস্তে নিয়ে মাঠে ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে। মাঠের পর মাঠ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সবুজের মাঝে সোনালী ধানের ঝিলিক। ফলে প্রান্তিক কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসি। অনুকূল আবহাওয়া,স্থানীয় কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ ও সঠিক ভাবে সার ব্যবহারের ফলে নাসিরনগরে এ বছর বোনা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
সরেজমিন উপজেলার সদর ইউনিয়নাধীন দাতমন্ডল গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, বিশাল এলাকা জুড়ে সবুজ সমারোহে ভরে ওঠেছে ধানের মাঠ। মাঠের মাঝে মাঝে কিছু ধান পাঁকতেও শুরু করেছে। কোনো কোনো মাঠে ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। দাতমন্ডল গ্রামের কৃষক সুলেমান(৪০) বলেন, আল্লাহর রহমতে এ বছর ফলন ভাল হয়েছে। তবে ধানের দাম কম হওয়ায় তাদের কপালে চিন্তার ভাজ দেখা যায়।
বুড়িশ্বর ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক কানো চন্দ্র দেব(৭০)বলেন, আমি এ বছর ১২ বিঘা বোনা আমন চাষ করেছি। অনুকূল আবহাওয়া,স্থানীয় কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ ও বর্ষার পানি বেশি হওয়ায় অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু ধানের দামের তুলনায় উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লোকসান গোনতে হবে। এক বিঘা জমি কেটে ঘরে তুলতে তাদের খরচ হচ্ছে প্রায় ছয় হাজার টাকা। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন শ্রমিকের অতিরিক্ত মুজরী প্রদান।
কুন্ডা ইউনিয়নের কৃষক হরিপদ(৬০)বলেন, অন্যন্য মৌসুমের ধান চাষের মত আমন ধান আবাদে পরিশ্রম কম হয়। মাঠে ধান ছিটানোর পর প্রয়োজনীয় সার দিলেই আবাদ করা যায়। তবে এ বছর ফলন ভাল হয়েছে। পর্যাপ্ত পানি হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভাল হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, নাসিরনগর উপজেলায় বোনা আমন ধানের ৯৯২৮ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। রোপা আমন আবাদ হয়েছে ৩৩৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। এ বছর তাদের লক্ষ্যমাত্র ছিল ১.৬ মে:ট: তবে অনুকূল আবহাওয়া, কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ ও বর্ষার পানি পরিমান মত হওয়ায় অন্য বছরের তুলনায় এ বছর লক্ষ্যমাত্র অতিক্রম করবে। এবছর বোনা ও রোপা আমন আবাদে বিভিন্ন ধরণের ধান চাষ করা হয়। গুডা,হিরুনী,আসমিতা,শিমুল,মাদোয়াইল,কাতিয়াইল,বিন্নী ও লাকী জাতের ধান।