ক্লাস ছুটি দিয়ে ক্লাসরুমেই ঘুম! প্রতিবাদ করায় রুমানার দম্ভ “আমার ভাই পুলিশ, সবগুলারে বেধে থানায় নিয়ে যাব”
এম.ডি.মুরাদ মৃধা :: স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কেউ বারান্দায়, কেউ মাঠে দৌড়াচ্ছে একটু বিরক্ত হলেন শিক্ষক রুমানা আক্তার। বললনে যাও তোমাদের স্কুল ছুটি। এই দিন উপস্থিত ৯/১০ জন ছাত্র ছাত্রী চলে গেল যার যার বাড়িতে। এদিকে মনের শান্তিতে ক্লাসের দরজা বন্ধ করে ঘুমাচ্ছেন শিক্ষিকা রুমানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের বুড়িশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এ চিত্র। এটি নিত্যদিনের ঘটনা বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক।
এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের অভিযোগ, রুমানা আক্তার প্রতিনিয়ত স্কুলে ঝগড়া-ঝাটি লাগিয়ে রাখে । সে নিয়মিত স্কুলে আসেনা। আসলেও ক্লাস করেনা। আর ক্লাসে আসলেই ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বুড়িশ্বর স্কুলের একাধিক শিক্ষক বলেন, রুমানার সাথে সহকর্মীদের কারো মিল নেই। কেউ কথা বলতে চাইলে সে ধমকিয়ে কথা বলেন। ক্লাসে আসলেই সে বিভিন্ন অজুহাতে ঘুমায়। ঘুমানোর কারন জানতে চাইলে তারা বলেন, বাড়িতে শশুর,শাশুরী এবং স্বামীর সাথে সবসময় ঝগড়া করে। রাতে সে ঘুমাতে পারেনা। তাই স্কুলে আসলে ঘুমায়।
তারা আরো বলেন, তাদের পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যা নাসিরনগরের পূর্বের ইউএনও সমাধান করেছেন।
শিক্ষকরা আরো জানান, স্কুলে রুমানার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায়না এমনি প্রধান শিক্ষকও ভয় পায়। কিছু বললেই সে জেলা শিক্ষা অফিসারের ভয় দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্যদের দমিয়ে রাখে।
সে প্রতিনিয়ত বলে, “আমি ডিপিও কে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে এখানে এসেছি । আমার ভাই একজন পুলিশ অফিসার। চাইলেই সবগুলারে বেধে থানায় নিয়ে যাব।”
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আহাম্মদ চৌধুরী বলেন, গত চার পাচঁ আগে আমার স্কুলের সহকর্মীদের সাথে তার ঝামেলা হয়। আমি ঝামেলা মিটাতে গেলে রুমানা আমাকে শাররীক ভাবে লাঞ্চিত করে এবং প্রায়ই বাজে আচরন করে যা আমি প্রকাশ করতে পারবনা। এমনকি ডিপিও স্যার বলছে এ ব্যাপারটি নিয়ে আর কথা না বলার জন্য। সে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মারধর করে। রুমানার ভাই পুলিশে চাকুরী করেন। স্কুলের বিভিন্ন বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে হুমকী দিয়ে থাকেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
অভিযোগে আরো জানা যায়, প্রধান শিক্ষক ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে রুমানার ভাই মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময় হুমকী দিয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে শিক্ষিকা রুমানা আক্তার তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ক্লাসে ঘুমাইনি। আমি ছাত্রছাত্রীদের মারধরও করিনি। এবং আমার ভাই কাউকে ফোনে হুমকীও দেয়নি। অথচ বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। সাংবাদিকদের হাতে অসংখ্য তথ্য প্রমাণ থাকার পরো তিনি সব মিথ্যে বলে দাবী করছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ ইকবাল মিয়া বলেন, আমরা কি করব? জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিজে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে অবগত হয়েছেন। আর উপজেলায় নতুন শিক্ষা অফিসার যোগদান করেছেন। আমি দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছি। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারবনা।