Main Menu

সরাইলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সালমার বিয়ে

+100%-

ballo bie
প্রশাসনরে বাধাঁয়ও বাঁচানো গেলোনা আর একটি ঝড়তে পড়া ফুলকে। গোপনে নিবন্ধন বিহীন এ বিয়ে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে গোটা সরাইলে। দুবাই প্রবাসী আলী নূরের মেয়ে সালমা (১৪) । বাহারি প্যান্ডেলের নীচে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সালমা বেগমের বিয়ে হয়েছে। সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের বড়বুল্লা গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, বড়বুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সালমা। বিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রারের জন্ম তারিখ অনুযায়ী সালমার বয়স মাত্র ১৪ বছর। একই গ্রামের আতাবুর রহমানের কাতার প্রবাসী ছেলে ওবায়েদ উল্লাহর (২৫) সাথে সালমার বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। এটা নিশ্চিত বাল্য বিয়ে জেনেও তারা ঘটা করে বিয়ের আয়োজন করেন। আলী নূরের বাড়ির পুরো ওঠানে সাঠানো হয় বিশাল প্যান্ডেল। বাহারি রংয়ের বড় গেইট। মোরগের রোষ্ট। গরু জবাই করে মাংশের তরকারি। মজাদার দধি। বরযাত্রীসহ গ্রামের শতাধিক লোক এ বিয়ের দাওয়াতি। রবিবার দুপুরে সালমাদের বাড়িতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল প্যান্ডেলের নীচে পাঁচটি টেবিল সাজানো। প্রত্যকটি টেবিলে ১২-১৪ জনের বসার ব্যবস্থা। খাবার প্রস্তুত। সাজগোজ শেষ করে সালমাকেও প্রস্তুত করা হয়েছে বিয়ের জন্য। সালমার পিতা আলী নূর কয়েকজন বয়োজেষ্ঠ্য ব্যক্তিকে নিয়ে বসে বরযাত্রীর অপেক্ষায় রাস্তার দিকে চেয়ে আছেন। আমন্ত্রিত অতিথিরাও আস্তে আস্তে আসছে। তবে কিছুক্ষণ পূর্বে সালমার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার আফরাহীম মঞ্জুর বাড়িতে এসে এ বাল্য বিয়ে না দেয়ার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে সালমার পিতাসহ পরিবারের সকলকে একটু চিন্তিত দেখা যায়।

চতুর্থ শ্রেণিতে পড়–য়া ছাত্রীকে বিয়ে দিচ্ছেন। তার বয়স কত? জিজ্ঞেস করতেই সালমার বাবা বলেন, ১৮ বছর। তবে জন্ম নিবন্ধন চাওয়া মাত্র তিনি বলেন, মন্নাফ মেম্বারে কইছে বিয়ার কামডা কোন রহমে শাইরা লাও। নিবন্ধন আমি বুজুম নে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মন্নাফ মিয়া বলেন, আমি জন্ম নিবন্ধন দেয়ার কথা বলিনি। এটা মিথ্যা কথা। মেয়ের বয়স একবারেই কম। বাল্য বিয়ে দেয়ার জন্য তারা পাগল হয়ে গেছে। বিয়ে বন্ধ করার কথা বলেছি। এখন শুনা না শুনা তাদের বিষয়।

বড়বুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার আফরাহীম মঞ্জুর সালমা তার বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী এ সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এটা শতভাগ বাল্য বিয়ে। এসব বিষয়ে আমি এখানে অসহায়। চেষ্টা থাকা সত্বেও এ গুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। কারন এ ধরনের কাজে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকদের কোন ধরনের সহযোগীতা পায় না।

সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাহিদা হাবিবা বলেন, বাল্য বিয়ের খবর পাওয়া মাত্র স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, সচিব ও তহশিলদারকে পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু গোপনে যদি কোন কৌশল অবলম্বন করে বিয়ে সম্পন্ন করে। তবে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে জেলে পাঠাব।

প্রসঙ্গতঃ গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রশাসনিক বাঁধার পর তারা দাওয়াতি মেহমান ও বরযাত্রীদের খাইয়েছে। কাজী চলে গেলেও তারা গোপনে একজন হুজুরের মাধ্যমে বিয়ে পড়িয়েছে (নিবন্ধন বিহীন)। এ গ্রামে গত এক বছরে পাঁচটি বাল্য বিয়ে হয়েছে।






Shares