প্রতিনিধি ঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সালিশ সভার মাধ্যমে এক কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য ২৫ হাজার টাকা নির্ধারন করেছে সালিশকারকরা। উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামে গত শুক্রবার আলোচিত এই সালিশ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে সালিশের রায় প্রত্যাখ্যান করেছে ওই কিশোরীর পরিবার। এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, উপজেলার টিঘর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান ১৪ বছরের এক কিশোরীকে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করে আসছিল একই এলাকার হামদু মিয়ার ছেলে রুবেল-(২৫)। সে বিভিন্ন সময় ওই কিশোরীকে অনৈতিক প্রস্তাবও দেয়। এতে কিশোরী রাজী হয়নি। গত বুধবার রাতে কিশোরীর মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে রাতের বেলা রুবেল কিশোরীর ঘরে ঢুকে পড়ে। কিশোরী বিষয়টি টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন রুবেলকে আটক করে। পরে এলাকার সমাজপতিরা বিচারের আশ্বাস দিয়ে রুবেলকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন বৃহস্পতিবার কিশোরীর বড় ভাই বাদি হয়ে সরাইল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেন সালিশকারকরা। বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে শুক্রবার বাদ জুম্মা গ্রামের উত্তর পূর্ব কোনার মসজিদ সংলগ্ন মাঠে স্থানীয় সালিশকারক ছোটন মিয়ার সভাপতিত্বে সালিশসভা বসে। সভায় উপস্থিত ছিলেন সালিশকারক শের আলী, হেলিম মিয়া, আবু তাহের মিয়া, কুতুব মিয়া ও আব্বাস মিয়া। সালিশে ওই কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য ২৫ হাজার টাকা নির্ধারন করেন সালিশকারকরা। সালিশে রুবেল ৫ হাজার টাকা প্রদান করে রায় মেনে নেন। বাকী টাকা পরে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ব্যাপারে সালিশকারক শের আলী ও হেলিম মিয়া সালিশ সভার কথা স্বীকার করে বলেন, দু’টি পরিবারই গরীব। একে অপরের আত্মীয়। তাই মেয়েটির বিয়ের জন্য ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। রুবেল ৫ হাজার টাকা দিয়ে রায় তামিল করেছে। টাকাটা সালিশকারক ছোটন মিয়ার কাছে জমা আছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সালিশে আমি ছিলাম না। ২৫ হাজার টাকার কথা শুনেছি। তবে কিশোরীর পরিবার কোন টাকা এখনো পায়নি। কিশোরীর বড় ভাই বলেন, আমরা সালিশী সভার রায় মানিনা। এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার চক্রবর্তী বলেন, সালিশের কথা শুনিনি। তবে কিশোরী ভাই একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। |