ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের দশা, ৪৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে ২০ জন অনুপস্থিত
চরম নৈরাজ্য, স্বেচ্ছাচারিতা আর বিশৃঙ্খলার মহোৎসব চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগে। যে যেভাবে পারছেন নিয়ম ভাঙ্গছেন পাল্লা দিয়ে। ছুটি-ছাটার তোয়াক্কা না করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত খোদ সিভিল সার্জন। কাউকে কিছু না জানিয়ে উধাও ২৫০ শয্যা বিশিস্ট জেলা সদর হাসপাতালের হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। আর হাতে নাতে এসব ঘটনার প্রমাণ পেয়েছেন স্বয়ং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা।
শনিবার সকাল ৯ টা ১০ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে হাসপাতালটির ৪৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে ২০ জনকেই অনুপস্থিত পান তিনি।
এদের মধ্যে ৪ জনই হচ্ছেন সিনিয়র কনসালটেন্ট, জুনিয়র কনসালটেন্টও রয়েছেন ৮ জন। শুধু তাই নয়, শহরে মাদ্রাসা ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষের পরের দিন থেকে হদিস নেই হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক নূরে আলম সিদ্দিকীর। কাউকে কিছু না জানিয়ে বেশ কদিন ধরেই হাসপাতালে আসছেন না তিনি। শুধু তত্ত্বাবধায়ক নন, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন ৩য় শ্রেণির ১৪ কর্মচারী।
চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. শওকত হোসেনও অনুপস্থিত রয়েছেন ছুটি ছাড়া। তিনি সিভিল সার্জনের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছেন দাবি করলেও এর সত্যতা মেলেনি।
আর যে সিভিল সার্জনের দোহাই দিয়ে বাঁচতে চাচ্ছেন তিনি সেই সিভিল সার্জন ডা. হাসিনা আক্তার নিজেই অনুমতি ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। যদিও তিনি ছুটির দরখাস্ত দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
কিন্তু এর সত্যতা পাননি খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব।
এদিকে অন্যদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছুটি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অরবিন্দ দত্ত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগে এই নজিরবিহীন নৈরাজ্যে চরম বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগী রোগীরা। বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম